Biography Of Manik Bandopadhyay in Bengali – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর জীবনী

Manik Bandopadhyay– আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর জীবনী – Biography Of Manik Bandopadhyay In Bengali

নামমানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়)
জন্ম19th মে 1908
জন্মস্থানদুমকা, সাঁওতাল পরগনা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা দুমকা জেলা, ঝাড়খণ্ড)
পিতাহরিহর বন্দ্যোপাধ্যায়
মাতানীরদাসুন্দরী দেবী
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার
মৃত্যু3rd ডিসেম্বর 1956 (বয়স 48)

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কে ছিলেন? Who is Manik Bandopadhyay?

নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় একজায়গায় বলেছেন, সচেতনভাবে বাস্তববাদের আদর্শ গ্রহণ করে সেই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে সাহিত্য করিনি বটে কিন্তু ভাবপ্রবণতার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিক্ষোভ সাহিত্যে আমাকে বাস্তবকেঅবলম্বন করতে বাধ্য করেছিল।

বাস্তবিক পক্ষে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মহারথী এই সাহিত্য সাধকের সমস্ত রচনার মধ্যেই ছড়িয়ে আছে মধ্যবিত্ত কৃত্রিমতা ও ভাবপ্রবণতার বিরুদ্ধে। তার তীব্র ক্ষোভ ও অন্তর্দাহ।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতামাতা ও জন্মস্থান: Manik Bandopadhyay’s Parents And Birth Place

বস্তুতঃ অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার আপসহীন সংগ্রাম, সমাজের নিম্নস্তরের মানুষদের দারিদ্রক্লিষ্ট সহজ সরল জীবনের বাস্তব প্রতিরূপ অঙ্কনের মধ্যেই তার সাহিত্য লাভ করেছিল সার্থকতা। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম হয়েছিল সাঁওতাল পরগনার দুমকায় ১৯০৮ খ্রিঃ ২৯ শে মে। পিতা হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায়। মাতার নাম নীরদাসুন্দরী।

তাঁদের আদি নিবাস ছিল ঢাকার বিক্রমপুরে। সাহিত্যক্ষেত্রে মানিক পরিচিত হয়েছিলেন তার ছেলেবেলার ডাক নামে। পিতৃদত্ত নাম ছিল প্রবােধকুমার। মানিকের প্রথম গল্প অতসী মামী প্রকাশিত হয়েছিল বিচিত্রা পত্রিকায়।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষাজীবন: Manik Bandopadhyay’s Educational Life

সেই সময় তিনি কলেজের ছাত্র। আত্মবিশ্বাসের অভাবে লেখক হিসেবে ডাকনামটি ব্যবহার করেছিলেন। ১৯২৮ খ্রিঃ অতসী মামী প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলা সাহিত্যে তার আসন নির্দিষ্ট হয়ে যায়। ফলে তার ডাকনামটিই স্থায়ী হয়ে যায়। পিতা হরিহর ছিলেন সরকারী চাকুরে। নানা স্থানে তাকে বদলি হতে হয়েছে কর্মসূত্রে। ফলে বাংলা ও বিহার অঞ্চলে মানিকের বাল্যকাল কেটেছে।

আরও পড়ুন- জীবনানন্দ দাশ জীবনী

পিতার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণের ফলে শৈশবে মানিকনানান পরিবেশ ও বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের জীবনযাত্রা প্রত্যক্ষকরবার সুযােগ পেয়েছিলেন। এই সময় থেকেই জীবনবােধ সম্বন্ধে তার সজাগ চেতনা গড়ে উঠেছিল, যা পরবর্তীকালে তার সাহিত্যে বিস্তার লাভ করেছিল।

মেদিনীপুরে দিদির কাছে কিছুকাল থাকতে হয়েছিল মানিককে। মেদিনীপুর জিলাস্কুল থেকেই প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। ১৯২৮ খ্রিঃ বাঁকুড়ার ওয়েসলিয়ান মিশন কলেজ থেকে আই-এস-সি পাশ করে অঙ্কে অনার্স নিয়ে কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন।

আরও পড়ুন- প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনী

এই সময়ই বিচিত্রা পত্রিকায় তার প্রথম গল্প অতসী মামী প্রকাশিত হয়। প্রথম আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই সাহিত্য জগতে সাড়া পড়ে। মানিকের প্রথম উপন্যাস দিবারাত্রির কাব্য একুশ বছরের রচনা।
সাহিত্য ক্ষেত্রের খ্যাতি মানিকের কলেজ জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটায়। তার আর বি.এস.সি. পরীক্ষা দেওয়া হয় না। সাহিত্যকেই জীবিকার একমাত্র অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত নেন।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্ম জীবন: Manik Bandopadhyay’s Work Life

বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে সেই সময়ে চলছে কল্লোল যুগ। মানিক ও ভিড়ে গেলেন কল্লোল পত্রিকার লেখক গােষ্ঠীর সঙ্গে। শুরু হলাে নিরন্তর সাহিত্য সাধনা।

মানিকের প্রথম উপন্যাস জননী প্রকাশিত হয় ১৯৩৫ খ্রিঃ। তৎকালীন বিখ্যাত সাহিত্য সাময়িকী ভারতবর্ষে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ তিনটি উপন্যাস পুতুলনাচের ইতিকথা ও পদ্মানদীর মাঝি। পূর্ববঙ্গের সাধারণ সমাজের কথা, তাদের জীবনের বিচিত্র আলেখ্য মরমী শিল্পীর মত তিনি চিত্রিত করেছেন।

এ ছিল এক নতুন জীবন দর্শন, নতুন দিগন্তের উন্মােচন। ফলে অল্পসময়ের মধ্যেই বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেন।

আরও পড়ুন- সুনির্মল বসুর জীবনী

সাহিত্যে সূচনা হল এক নতুন যুগের। নানা কারণে প্রচন্ডঅর্থকষ্টেরমধ্য দিয়ে চলতে হয়েছিল মানিককে। খাটি লেখক হবার প্রেরণায় তিনি বড় চাকরির প্রলােভনও প্রত্যাখ্যান করেছেন।

শেষ দিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার জন্য সাহিত্যিক বৃত্তির ব্যবস্থা করেন। সংগ্রামী-জীবনের সার্থক রূপকার মানিক মার্কসবাদে দীক্ষিত হয়েছিলেন। তার সাহিত্যে এই প্রভাব অতি স্পষ্ট। বস্তুতঃ মার্কসবাদই তাকে মধ্যবিত্তসুলভ ভাবপ্রবণতার গণ্ডি থেকে উত্তরণের পথ নির্দেশ করেছিল।

তিনি লাভ করেছিলেন প্রশস্ততর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি। পঞ্চাশটিরও বেশি উপন্যাস, বহু গল্প ও কবিতা রচনা করেছেন মানিক।

তার উল্লেখযােগ্য উপন্যাস পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, অমৃতস্য পুত্রাঃ, সহরতলী, প্রাণেশ্বরের উপাখ্যান প্রভৃতি।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু: Manik Bandopadhyay’s Death

মাত্র আটচল্লিশ বছর বয়সে ১৯৫৬ খ্রিঃ ৩ রা ডিসেম্বর, কঠিন রােগভােগের পর সংগ্রামী জনতার শ্রম ও স্বেদের রূপকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়।

Q. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল নাম কি?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।

Q. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম গল্পের নাম কি?

বন্ধুর সাথে বাজি ধরে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম গল্প লিখে ফেললেন তার প্রথম গল্প “অতসী মামী” এবং সেটি বিচিত্রার সম্পাদক বরাবর পাঠিয়ে দেন। গল্পের শেষে নাম সাক্ষর করেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় হিসাবে।

Q. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস কোনটি?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘পদ্মানদীর মাঝি’।

Leave a Comment