Biography Of Jibanananda Das – লেখক জীবনানন্দ দাশ জীবনী

Jibanananda Das– আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম লেখক জীবনানন্দ দাশ -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

লেখক জীবনানন্দ দাশ জীবনী – Biography Of Jibanananda Das

নামজীবনানন্দ দাশ
জন্ম17 ফেব্রুয়ারি 1899
জন্মস্থানবরিশাল, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)
পিতাসত্যানন্দ দাশগুপ্ত
মাতাকুসুমকুমারী দাশ
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
পেশাকবি, লেখক ও অধ্যাপক
মৃত্যু22 অক্টোবর 1954 (বয়স 55)

জীবনানন্দ দাশ কে ছিলেন? Who is Jibanananda Das?

আধুনিক বাংলা কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের পরেই যাঁর নামটি উচ্চারিত হয় তিনি হলেন চিত্র রূপময় বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জীবনানন্দ দাশ।

জীবনানন্দ স্বীয় কবিমানসের আত্মকথন এভাবে করেছেন, আমার কাব্য প্রেরণার উৎস নিরবধি কাল ও ধূসর প্রকৃতির চেতনার ভিতরে রয়েছে বলেই ততা মনে করি। তবে সে প্রকৃতি সব সময়েই যে ধূসর তা নয়। “মহাবিশ্ব-লােকের ইশারা থেকে উৎসারিত সময় চেতনা, Consciousness of time as a, a Universal, তা আমার কাব্যে একটি সঙ্গীতসাধক অপরিহার্য সত্যের মত।”

আরও পড়ুন- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী

জীবনানন্দের (Jibanananda Das) জীবনী হাতেই আধুনিক বাংলা কাব্যের বাঙ্গি ও রসরূপের দীক্ষা সম্পন্ন হয়েছিল। এক নতুন আদর্শ, গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও বলিষ্ঠ লােকচেতনা বােধে রবীন্দ্রোত্তর বাংলা কাব্যকে সমৃদ্ধি দান করেছিল।

তাঁর কাব্য ছিল বর্ণনা বহুল, লােক থেকে লােকোত্তরের সন্ধান দিত, বর্ণময় চিত্রময়, যা প্রকৃত প্রেমকে ছাড়পত্র দিত বিশ্বমানস লােকে। রবীন্দ্রপ্রভাবে লালিত হয়েও তিনি তার কাব্য নির্মিতিতে স্বাতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকরতে পেরেছিলেন।

জীবনানন্দ দাশের জন্ম: Jibanananda Das’s Birthday

১৮৯৯ খ্রিঃ ১৭ ই ফেব্রুয়ারী বরিশালের এক ব্রাহ্মপরিবারে জীবনানন্দ দাশের জন্ম।

জীবনানন্দ দাশের পিতামাতা ও জন্মস্থান: Jibanananda Das’s Parents And Birth Place

পিতার নাম সত্যানন্দ দাশ। মাতা কুসুমকুমারী। রচনা করে সেই যুগে। কবিখ্যাতি লাভ করেছিলেন। তাঁর বিখ্যাত কবিতা ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’।

মায়ের সাহিত্য প্রতিভাই লাভ করেছিলেন জীবনানন্দ। তার কাব্যপ্রতিভা বিকাশলাভ করেছিল মায়েরই প্রযত্নে ও উৎসাহে।

জীবনানন্দ দাশের ছোটবেলা: Jibanananda Das’s Childhood

বাল্যবয়স থেকেই রূপময় প্রকৃতির প্রতি তাঁর কবিমন আকৃষ্ট হয়েছিল। ভােরের নির্মল আকাশ, শিশির ভেজা ঘাস, ধানের ক্ষেতে উদ্দাম হাওয়ার মাতন, নদীর চরের চিল-ডাকা বিষন্ন দুপুর, জলে-ভাসা নৌকোর তন্ময় গলুই- সবকিছু, প্রকৃতির সব বর্ণ-বৈচিত্র্য জীবনানন্দের কাছে এক অজানা সুদূরের হাতছানি হয়ে ধরা দিত।

আরও পড়ুন- প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনী

এক অকারণ বিষন্নতায় ভরে উঠত তার মন। রূপ থেকে অরূপের সন্ধানে বিচরণশীল সেই মন স্কুলের খাতায় কবিতা রচনা করে লাভ করত মুক্তি। একাকী নিজের ভাবনায় ডুবে থাকতেই যেন তিনি ভালবাসতেন।

পরবর্তীকালে জীবনানন্দ তাঁর নিজের কবিতার উৎস-পরিচিতি দিতে গিয়ে যে কথাবলেছেন, তাতেই তার শৈশবও কৈশােরের পরিবেশ, কবিমানসের বিচরণক্ষেত্র স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে।

জীবনানন্দ দাশের শিক্ষাজীবন: Jibanananda Das’s Educational Life

শিক্ষারম্ভ হয়েছিল স্থানীয় ব্রজমােহন স্কুলে। পরে ব্রজমােহন কলেজ থেকে আই.এ. পাস করে কলকাতায় আসেন। ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। ইংরাজিতে অনার্স নিয়ে বি.এ. পাশ করেন। ১৯২১ খ্রিঃ এম.এ. পাস করে প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপকের চাকরি গ্রহণ করেন।

১৯২৮ খ্রিঃ পরিচয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তার বহু বিতর্কিত কবিতা ক্যাম্পে। অশ্লীলতার অভিযােগ উত্থাপিত হয় কবির বিরুদ্ধে। সেই সূত্রে অধ্যাপনার চাকরি খােয়াতে হয়।

জীবনানন্দ দাশের কর্ম জীবন: Jibanananda Das’s Work Life

এরপর বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করেন। সর্বশেষ ব্রজমােহন কলেজে অধ্যাপনাকালে ১৯৪৭ খ্রিঃ দেশবিভাগ হলে কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতায় স্বরাজ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে কিছুদিন কাজ করেন।

আরও পড়ুন- সুকুমার রায় জীবনী

পরে ১৯৫১ খ্রিঃ থেকে খড়গপুর কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৫৩ খ্রিঃ হাওড়া গার্লস কলেজে যােগদান করেন। সেই বছরই কাব্যরচনার জন্য রবীন্দ্রপুরস্কার লাভ করেন।

জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু: Jibanananda Das’s Death

পরের বছরেই ট্রাম দুর্ঘটনায় আহত হন এবং ২২ শে অক্টোবর মারা যান।

জীবনানন্দ দাশের রচনা: Written by Jibanananda Das

জীবনানন্দের (Jibanananda Das) প্রথম কাব্যগ্রন্থ ঝরা পালক। পরে একে একে প্রকাশিত হয় ধূসর পান্ডুলিপি, সাতটি তারার তিমির, রূপসী বাংলা প্রভৃতি।

তাঁর রচিত বনলতা সেন আধুনিককালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। জীবনানন্দের কাব্যের ইতিহাস চেতনা, নিঃসঙ্গ বিষন্নতা এবং অবশ্যই বিপন্ন মানবতার ব্যথা তার স্বকীয় বিশিষ্টতা নিয়ে স্থান লাভ করেছিল।

জীবনানন্দের প্রবন্ধ গ্রন্থ কবিতার কথা, জীবনানন্দ দাশের গল্প উপন্যাস মাল্যবান ও সতীর্থ তার সাহিত্যধারার উল্লেখযােগ্য সংযােজন।

Leave a Comment