Biography Of Shivram Chakraborty – শিবরাম চক্রবর্তী জীবনী সমগ্র

শিবরাম চক্রবর্তী জীবনী সমগ্র – Biography Of Shivram Chakraborty: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম শিশু সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী (Shivram Chakraborty) -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

শিবরাম চক্রবর্তী জীবনী সমগ্র – Biography Of Shivram Chakraborty

নামশিবরাম চক্রবর্তী
জন্ম13th ডিসেম্বর 1903
পিতাশিবপ্রসাদ চক্রবর্তী
মাতা
জন্মস্থানদর্জিপাড়া, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাবাঙালি রম্যলেখক
মৃত্যু28th আগস্ট 1980

শিশু সাহিত্যিক হিসেবে সমধিক প্রসিদ্ধ হলেও অম্লমধুর টিকাটিপ্পনী এবং গুরুগম্ভীর রচনাতেও দক্ষ ছিলেন। কথার পিঠে কথা চাপিয়ে সরস পান (Pun) রচনার ধারা তিনি বাংলা সাহিত্যে প্রবর্তন করেছিলেন যা শিবরামী স্টাইল নামে পরিচিত।

শিবরাম চক্রবর্তীর পিতামাতা ও জন্মস্থান

সুসাহিত্যিক শিবরাম জন্মসূত্রে মালদহের চাচল রাজবাড়ির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পৈতৃক নিবাস ছিল মুর্শিদাবাদের জরুরবানা। কলকাতায় মাতুলালয়ে জন্ম ১৯০৩ খ্রিঃ ১৩ ই ডিসেম্বর। পিতার নাম শিবপ্রসাদ চক্রবর্তী। তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক মনােভাবের মানুষ।

গৃহবন্ধন বেশিদিন সহ্য হত না বলে মাঝে মাঝেই নিরুদ্দেশে বেরিয়ে পড়তেন। পিতার এই ভবঘুরে ঘরপালান স্বভাব শিবরামের মধ্যেও বর্তেছিল।

কিশাের বয়স কেটেছিল প্রথমে পাহাড়পুরে ও পরে চাঁচলে। সেই বয়সেই নিঃসম্বল অবস্থায় বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন এবং জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। তাঁর এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই পরে রচনা করেছিলেন বাড়ি থেকে পালিয়ে। কাহিনীটি চলচ্চিত্রায়িত হয়েছিল।

শিবরাম চক্রবর্তীর শিক্ষাজীবন

স্কুলে থাকতেই স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জেল খেটেছেন। ফলে প্রথাগত শিক্ষা বেশিদূর এগােয়নি। তবে পড়াশুনাে করেছেন প্রচুর এবং বিভিন্ন বিষয়ে। স্বদেশী কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দেশবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যলাভ করেছিলেন।

শিবরাম চক্রবর্তীর কর্ম জীবন

বিজলীও ফরােয়ার্ড পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাংবাদিকতা করেছেন। পরে যুগান্তর নামে পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন।

সাহিত্য ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন কবি হিসেবে। প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম মানুষ। পরে বসুমতী, আনন্দবাজার, দেশ প্রভৃতি কাগজে নিয়মিত অম্লমধুর টিকাটিপ্পনীর ফিচার লিখে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। শিবরাম চকরবরতি নামে নিজেকে নিয়ে ঠাট্টা তামাসা করে লিখতেন।

এরকম নজির বাংলা সাহিত্যে বিরল। তার ‘পান’ সমৃদ্ধ ছােটদের ও বড়দের জন্য সরস রচনা বিশেষ সমাদর লাভ করেছিল। বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্মরণীয় সৃষ্টি কৌতুকচরিত্র হর্ষবর্ধন গােবর্ধন দুই ভাই ও বিনি।

হাসির ঘটনা হাসির কথা তার লেখনীকে সমৃদ্ধ করেছিল। হাসির রাজা শিবরাম (Shivram Chakraborty) নামেই তার নাম বিজ্ঞাপিত হত। মুক্তারামবাবু স্ট্রীটের মেসবাড়ির একটি ঘরেই আজীবন কাটিয়েছেন। নিজেই বলতেন ‘মুক্তারামের তক্তারামে শুক্তোরাম খেয়ে’ আরামে আছেন। দিলখােলা, সদাহাস্যময় শিবরামকে কলকাতার পথেঘাটে প্রায়ই দেখা যেত শৌখিন ঝলমলে পাঞ্জাবী পরে ঘুরে বেড়াতে। ভক্তদের সঙ্গে দেখা হলেই পকেট থেকে বার করে চকোলেট খাওয়াতেন হাসিমুখে।

শিবরাম চক্রবর্তীর রচনা

দীর্ঘ ৬০ বছরের জীবনে দু হাতে লিখেছেন। হাস্যরসাত্মক গল্প ও ফিচার রচনাকেই সাহিত্য রচনার প্রধান মাধ্যম করেছিলেন। ছােটদের বড়দের মিলিয়ে দেড়শতাধিক বই লিখেছেন তিনি। ষােড়শী নামে শরৎচন্দ্রের দেনাপাওনা উপন্যাসের নাট্যরূপ দিয়েছিলেন।

তাঁর রচিত বিখ্যাত নাটক যখন তারা কথা বলবে। রাজনীতির ওপরে রচিত মস্কো বনাম পণ্ডিচেরী বিখ্যাত গ্রন্থ। ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা শিবরামের (Shivram Chakraborty) আত্মজীবনীমূলক বিখ্যাত গ্রন্থ।

এই গ্রন্থে তার সমসাময়িক সময়ের বহু চরিত্র ও ঘটনা অননুকরণীয় সরস ভঙ্গীতে বর্ণনা করেছেন। শেষ বয়সে আর্থিক অনটনে নাজেহাল হয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন।

শিবরাম চক্রবর্তীর মৃত্যু

১৯৬৬ খ্রিঃ ২৮ শে আগষ্ট মুক্তারামের তক্তারাম ছেড়ে লােকান্তরিত হন।

আরও পড়ুন-

Leave a Comment