Hippocrates Biography in Bengali – হিপোক্রেটিস এর জীবনী

Hippocrates Biography: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম চিকিৎসক হিপোক্রেটিস (Hippocrates) -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

Hippocrates Biography in Bengali – হিপোক্রেটিস এর জীবনী

নামহিপোক্রেটিস
জন্মখ্রিঃ পূর্ব ৪৬০ অব্দে।
জাতীয়তাকস, প্রাচীন গ্রিস
পেশাচিকিৎসক
মৃত্যুখ্রিষ্টপূর্ব ৩৭০ লারিসা, প্রাচীন গ্রিস

হিপোক্রেটিস কে ছিলেন? Who is Hippocrates?

প্রাচীন গ্রীকদের সভ্যতা নতুন প্রাণ পেয়েছিল খ্রিস্টের জন্মের চার আর পাঁচ শতক পূর্বে। রেনেসাঁ তথা নবজাগরণের স্রোত সেসময় বয়ে গিয়েছিল সারা গ্রীস দেশে। সেই সময়ে এমন সব ক্ষণজন্মা প্রতিভাধর মানুষের আবির্ভাব হয়েছিল যাঁদের অবদান মানুষের মন ও চিন্তাকে সমৃদ্ধ করেছে।

এই সময়ে দর্শন শাস্ত্রের অঙ্গন আলোকিত হয়েছে সক্রেটিস, সফোক্লিস, প্লেটো ও অ্যারিস্টটলের মনীষার আলোকে।

বিশ্বের নাট্যসাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন অ্যাসকাইলাস, সোফোক্লিস, ইউরিপিদিস প্রমুখ।

বিজ্ঞান সমৃদ্ধ হয়েছিল হিপোক্রেটিস, ইউক্লিড, আর্কিমিডিস, পিথাগোরাসের প্রতিভার অবিস্মরণীয় অবদানে।

যুক্তি ও মুক্ত বুদ্ধির আলো নিয়ে এই সময়েই সংস্কারাচ্ছন্ন চিকিৎসাশাস্ত্রে আবির্ভূত হয়েছিলেন হিপোক্রেটিস। তৈরি হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের মহৎ সম্ভাবনা। তাই তাঁকে বলা হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক।

২৫০০ বছর আগেকার গ্রীস দেশে চিকিৎসা শাস্ত্র ছিল নানা অন্ধ বিশ্বাস ও সংস্কারে আচ্ছন্ন- অনেকটাই তার ভূত প্রেত জড়ি বুটির প্রভাবে আচ্ছন্ন। চিকিৎসাবিদ্যা ছিল গুপ্তবিদ্যা।

অ্যাপলো ছিলেন প্রাচীন গ্রীসের চিকিৎসার দেবতা। দেশের বিভিন্ন স্থানে অ্যাপলোদেবের মন্দিরে লোকে অসুখ-বিসুখের আরোগ্য কামনায় হত্যা দিত। পুজো ও শূকর ইত্যাদি উৎসর্গ করত। পুরোহিতদের তারা মনে করত দেবতার প্রতিনিধি। তাই রোগগ্রস্তের চিকিৎসা করত পুরোহিতরাই।

এইভাবে পুরোহিতদের মধ্যেই চিকিৎসাবিদ্যার চর্চা সীমাবদ্ধ ছিল। তারা দেবতার নামে নিজেদের প্রত্যক্ষ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান প্রয়োগ করে রোগীর চিকিৎসা করত।

হিপোক্রেটিস এর জন্ম: Hippocrates’s Birthday

এমনি এক পুরোহিত চিকিৎসকের পুত্র ছিলেন হিপোক্রেটিস। তাঁর জন্ম হয়েছিল খ্রিঃ পূর্ব ৪৬০ অব্দে।

আড়াই হাজার বছর পূর্বেকার তথ্যাদি যতটুকু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে তা থেকে জানা যায়, হিপোক্রেটিসের জন্মস্থান ঈজিয়ান সাগরের কসদ্বীপ। এই দ্বীপেরই অ্যাপলো মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন তাঁর বাবা।

হিপোক্রেটিস এর শিক্ষাজীবন: Hippocrates’s Educational Life

হিপোক্রেটিস ছিলেন সহজাত মেধার অধিকারী। অল্প বয়সেই পিতার কাছ থেকে সমস্ত গুপ্তবিদ্যা আয়ত্ত করেন।

সেইকালে এথেন্স ছিল সমগ্র গ্রীসের শিক্ষা-সংস্কৃতির পাঠশালা। বিভিন্ন দেশের চিন্তাবিদ মনীষীদের সমাগম ছিল সেখানে। চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে গভীরতর পড়াশুনা শেখার জন্য হিপোক্রেটিস এলেন এথেন্সে।

সেই যুগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ডেমোক্রেটিসের কাছে শিক্ষা লাভ করেছিলেন তিনি। অঙ্ক, প্রকৃতিবিজ্ঞান, দর্শন ও কলা বিষয়ে পড়াশুনা করে জ্ঞানের তৃষ্ণা বৃদ্ধি পায়।

এথেন্সে যেসব পন্ডিত চিকিৎসক ছিলেন, এ ছাড়া দেশবিদেশ থেকে যেসব জ্ঞানী গুণী মানুষ সেখানে আসতেন, তাঁদের কাছে নানাভাবে শিক্ষা অর্জন করেছেন তিনি।

প্রাচীন গ্রীসের চিকিৎসাবিদ্যা ছিল ভুল-ত্রুটিতে ভরা, মিথ্যাচার ও প্রতারণায় মোড়া বিদ্যা। মানুষের কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসই বাঁচিয়ে রেখেছিল এই গুপ্ত বিদ্যাকে।

হিপোক্রেটিস এর চিকিৎসা আরম্ভ: Beginning of Hippocrates’ medicine

হিপোক্রেটিস নিজেও ছিলেন পুরোহিত চিকিৎসকের পুত্র। নিজের জ্ঞান ও যুক্তি নির্ভর মননের বলে তিনি প্রচলিত চিকিৎসাবিদ্যার সমস্ত দোষ-ত্রুটি উপলব্ধি করলেন। তিনি সিদ্ধান্ত করলেন, এই অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসাব্যবস্থাকে প্রকৃত সত্যের ওপরে প্রতিষ্ঠা করবেন।

অবিলম্বেই তিনি রুগীর চিকিৎসা আরম্ভ করলেন। নিজের একটি চিকিৎসালয়ও প্রতিষ্ঠা করলেন।

সেই সময়ের প্রচলিত ব্যবস্থা অনুযায়ী রোগের উপসর্গ দেখে রুগীকে ওষুধ দেওয়া হত। কেবল রোগটাই হত চিকিৎসকদের লক্ষ্য।

হিপোক্রেটিসের চিকিৎসা-ভাবনা ছিল প্রচলিত ব্যবস্থা থেকে স্বতন্ত্র। তিনি রোগের বিষয়ে সবিশেষ মাথা না ঘামিয়ে রুগীর চিকিৎসায় মনোনিবেশ করলেন।

হিপোক্রেটিস এর কর্ম জীবন: Hippocrates’s Work Life

তিনি বলেছেন, একজন চিকিৎসকের উচিত রুগীর সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করা। রুগীর প্রতিদিনকার জীবনযাত্রা, পরিবারের অন্যান্যদের বিশেষ করে পিতা-মাতার রোগের ইতিহাস, রুগীর পরিবেশ, কাজকর্ম ইত্যাদি বিষয়ে অনুসন্ধান করে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসা প্রণালী নির্ধারণ করতে হবে।

এই আদর্শ মেনে রুগীর চিকিৎসা করে অল্প দিনের মধ্যেই চিকিৎসক হিসেবে হিপোক্রেটিস বিখ্যাত হয়ে উঠলেন। রুগীর ভিড় বাড়তে লাগল তাঁর চিকিৎসালয়ে।

হিপোক্রেটিস কি করেছিলেন? : What did Hippocrates do?

একজন তরুণ চিকিৎসকের এই অভাবিত জনপ্রিয়তা দেখে দেশের প্রবীণ চিকিৎসকরা স্বভাবতই ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়লেন। তাঁরা হিপোক্রেটিসের চিকিৎসাপদ্ধতির সমালোচনায় সোচ্চার হয়ে উঠলেন।

চিকিৎসাবিদ্যার নামে পুরোহিত সম্প্রদায় যেসব ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে আসছিল হিপোক্রেটিস ক্রমেই জনসাধারণের মধ্যে সেসব প্রকাশ করে দিতে লাগলেন।

এবারে প্রমাদ গুণলেন পুরোহিত আর চিকিৎসকের দল। দীর্ঘদিনের প্রতিপত্তি হারাবার ভয়ে তাঁরা হিপোক্রেটিসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন। তাঁর নামে তারা অপপ্রচার শুরু করলেন।

আসন্ন বিপদের আভাস পেয়ে হিপোক্রেটিস সতর্ক হলেন। তিনি বুঝতে পারলেন এথেন্সে থাকা নিরাপদ হবে না। মিথ্যাচারী পুরোহিত সম্প্রদায় তাঁর জীবনের ওপর আঘাত হানতেও ইতস্ততঃ করবে না। তিনি অবিলম্বে এথেন্স ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেলেন।

হিপোক্রেটিস প্রাচীন দার্শনিক

সেই যুগে মানুষের শরীরতত্ত্ব সম্বন্ধে বিশেষ কোন ধারণা চিকিৎসকদের ছিল না। তাই শবব্যবচ্ছেদ ছিল নিষিদ্ধ, ধর্মবিরুদ্ধ। এই পরিস্থিতিতেই হিপোক্রেটিস মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্বন্ধে বহু ক্ষেত্রে নির্ভুল ধারণা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।

হাড় ভেঙ্গে গেলে বা সরে গেলে তিনি ব্যবস্থা দিয়েছেন ব্যান্ডেজ বাঁধার। ভাঙ্গা হাড় জুড়বার জন্য তিনি সেই স্থানে এক টুকরো কাঠ রেখে তার ওপর ব্যান্ডেজ বেঁধে দিতেন।

প্রাচীন গ্রীসে শরীর চর্চাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হত। সুস্থ সবল দেহে বেঁচে থাকার জন্য শরীর গঠনের ওপর বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হত। তাই গ্রীসের সর্বত্র গড়ে উঠেছিল ব্যায়ামচর্চার আখড়া। বসতো খেলাধুলোর আসর।

এই সকল স্থানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। পেশী সংক্রান্ত গোলযোগে খেলোয়াড়রা অসুস্থ হয়ে পড়ত।

হিপোক্রেটিস নিয়মিত এই সব ক্ষেত্র পরিদর্শন করতেন এবং প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চিকিৎসার বিধান দিতেন। এই ভাবে আধুনিক শল্যচিকিৎসার সূত্রপাত সেই যুগে হিপোক্রেটিস করেছিলেন।

সমকালীন প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার গন্ডী ভেঙ্গে তিনি হিউমেরাল বা মানবদেহ নির্গত বিভিন্ন ধরনের রস সংক্রান্ত চিকিৎসারও প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি এই হিউমের বা দেহ নিঃসৃত রসকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। তাঁর মতে এই রসই নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের মানসিক আচার ব্যবহার, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত। এই রসের বিভিন্ন অবস্থা পরিবর্তনের সঙ্গে মানবদেহের স্বাভাবিকতারও পরিবর্তন ঘটে থাকে।

খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন মহান চিকিৎসা বিজ্ঞানী গ্যালেন। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে তিনিই দৃঢ় ভিত্তির ওপরে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। গ্যালেন হিপোক্রেটিসের হিউমেরাল মতবাদকে গ্রহণ করেছিলেন।

আরও পড়ুন: চিকিৎসক জীবক জীবনী

অবশ্য পরবর্তীকালে এই মতবাদ ভ্রান্ত বলে প্রমাণ হয়েছিল। মানবের দেহ ও মনকে হিউমের বা দেহনিঃসৃত রস নিয়ন্ত্রণ করে এই মতবাদ অগ্রাহ্য হয়েছিল।

কিন্তু অতি আধুনিক কালে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দেহের বিভিন্ন গ্রন্থি নির্গত রস, দেহ কোষের তরল পদার্থ, রস ইত্যাদির মানবদেহকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

আধুনিক কালে মানব দেহের স্বাভাবিক তাপের হ্রাস-বৃদ্ধিকে অসুস্থতা বলে নির্ণয় করা হয়ে থাকে এবং সেই ভাবেই চিকিৎসা করা হয়। রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে মানবদেহের তাপমাত্রার গুরুত্ব হিপোক্রেটিসই প্রথম অনুধাবন করেছিলেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিপোক্রেটিসের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান হল, মানবদেহের ফোঁড়া, আব, পচন ইত্যাদির কারণ ও প্রতিকার নির্ণয়। গভীর অনুশীলনের ফলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, অপরিচ্ছন্ন ও দূষিত দ্রব্য ব্যবহারের ফলেই এই সব রোগের উৎপত্তি হয়ে থাকে। তাই তিনি পরিষ্কার জল, পরিচ্ছন্ন পোশাক ও নিরোগ খাদ্যাদি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অন দি স্যাক্রেড ডিসিস নামে একটি গ্রন্থে হিপোক্রেটিস অন্যান্য রোগের সঙ্গে মৃগীরোগ বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এই রোগটি সম্পর্কে সেই সুপ্রাচীনকাল থেকেই মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।

বর্তমানকালেও বহু মানুষের ধারণা অপদেবতা কিংবা শয়তানের প্রভাবেই মানুষ মৃগীরোগগ্রস্ত হয়। হিপোক্রেটিস সেই যুগেই লিখেছেন, অপদেবতার ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। অন্য দশটি রোগের মতোই মৃগীরোগ সুনির্দিষ্ট কারণের ফলেই সৃষ্টি হয়ে থাকে।

হিপোক্রেটিস এর চিকিৎসা সংক্রান্ত বই: Hippocrates medical Book

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে হিপোক্রেটিস বই লিখেছেন সাতাশিটি। পরবর্তীকালে তাঁর এই বইগুলি চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। চিকিৎসা গবেষণাকে করেছে বিজ্ঞানমুখী।

হিপোক্রেটিসের চিকিৎসক জীবন ছিল মহৎ আদর্শ প্রণোদিত। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সর্বমানবের সেবা করা। তাই মহৎ আচরণকেই তিনি সবার ওপরে স্থান দিয়েছিলেন।

তিনি বলতেন, প্রত্যেক চিকিৎসকেরই উচিত চিকিৎসা শিক্ষা করার পাশাপাশি ব্যবহারিক দিকগুলোর বিষয়েও ওয়াকিবহাল হওয়া। তাহলেই চিকিৎসকের পূর্ণতা সম্ভব হবে।

প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা শাস্ত্র

সেই যুগে চিকিৎসাক্ষেত্রে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন হিপোক্রেটিস। জীবদ্দশাতেই তিনি অ্যাপলোদেবের অবতার বলে সম্মান ও শ্রদ্ধা লাভ করেছেন। তিনি বলেছেন, রোগ চিকিৎসার জন্য চাই স্থির বুদ্ধি ও ধীর মস্তিষ্ক। শত ব্যস্ততার মধ্যেও স্থির বুদ্ধি প্রয়োগ করে রোগ নির্ণয় করতে হবে।

সেই কালের চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে নানা উপদেশ নির্দেশ দিয়ে তিনি যে বই লিখেছেন তার বহু নির্দেশ প্রবচনরূপে বর্তমানেও প্রচলিত। তাঁর সমস্ত রচনাই জীবনব্যাপী গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতার আলোয় সমৃদ্ধ।

আলেকজান্দ্রিয়ার একটি গ্রন্থাগারে হিপোক্রটিসের রচনাগুলি সংরক্ষিত হয়েছিল। তাঁর অনুগামীদের উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই গ্রন্থাগার। চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন নতুন বই সেখানে সংগৃহীত হয়েছে। হিপোক্রেটিস বলতেন, সকল বিদ্যার মধ্যে চিকিৎসাবিদ্যাই শ্রেষ্ঠ। এই বিদ্যাকে মানুষের সেবার কাজে নিয়োজিত করাই প্রকৃত চিকিৎসকের কর্তব্য। কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসের অন্ধকার থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে সর্বপ্রথম যুক্তি ও সত্যের আলোকে নিয়ে এসেছিলেন হিপোক্রেটিস। তাই তিনি সর্বকালের চিকিৎসকদের প্রণম্য পুরুষ।

আরও পড়ুন: জগদীশচন্দ্র বসু জীবনী

যে সব ছাত্র তাঁর কাছে চিকিৎসাশাস্ত্র শিক্ষা করতে আসত, তাদের শিক্ষা শেষ হলে, তারা যাতে মহৎ আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হয় সেইজন্য তিনি তাদের দিয়ে শপথ করাতেন। একে বলা হত হিপোক্রেটিসের শপথ।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্ররা পৃথিবীর বহু দেশে আজও পর্যন্ত সেই পবিত্র শপথ উচ্চারণ করেন -এই পেশাকে আমি আমার জীবনের মতোই পবিত্ৰ সুন্দর ও নির্মল করে রাখব।

হিপোক্রেটিস এর মৃত্যু: Hippocrates’s Death

এই মহান মানবহিতৈষী বিজ্ঞানী দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলেন। খ্রিস্টজন্মের ৩৭০ বছর আগে নব্বই বছর বয়সে হিপোক্রেটিসের জীবনাবসান হয়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস কে?

হিপোক্রেটিস অফ কোস (460-377 সাধারণ যুগের আগে, BCE) সর্বজনীনভাবে আধুনিক ওষুধের জনক হিসাবে স্বীকৃত, যা ক্লিনিকাল লক্ষণ এবং যৌক্তিক সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে এবং ধর্মীয় বা জাদু বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে না।

হিপোক্রেটিস কবে জন্মগ্রহণ করেন?

হিপোক্রেটিস, (জন্ম c. 460 bce , Cos দ্বীপ, গ্রীস—মৃত্যু c. 375 bce, Larissa, Thessaly), প্রাচীন গ্রীক চিকিত্সক যিনি গ্রীসের ধ্রুপদী যুগে বসবাস করতেন এবং ঐতিহ্যগতভাবে তাকে ঔষধের জনক হিসাবে গণ্য করা হয়।

হিপোক্রেটিক কর্পাস কোথায় অবস্থিত?

মৃতদেহটি Cos-এর একটি লাইব্রেরির ধ্বংসাবশেষ বা আলেকজান্দ্রিয়ায় খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে সংকলিত একটি সংগ্রহ হতে পারে। যাইহোক, কর্পাস প্রাচীন গ্রীক মেডিসিনের Coan স্কুলের বাইরের কাজগুলি অন্তর্ভুক্ত করে; Cnidian স্কুলের কাজগুলিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হিপোক্রেটিক লেখার একটি ভগ্নাংশই টিকে আছে।

Leave a Comment