Tarasankar Bandyopadhyay Biography in Bengali – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

Tarasankar Bandyopadhyay Biography: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (Tarasankar Bandyopadhyay) -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

Table of Contents

Tarasankar Bandyopadhyay Biography In Bengali – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

নামতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম২৩ জুলাই, ১৮৯৮
জন্মস্থানপশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে
পিতাহরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
মাতাপ্রভাবতী দেবী
পেশাঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার
দাম্পত্য সঙ্গীউমাশশী দেবী
উল্লেযোগ্য উপন্যাসগণদেবতা ’ , ‘ পঞ্চগ্রাম ‘, হাঁসুলিবাঁকের উপকথা ’ , ‘ যােগভ্রষ্ট ’, ‘ ধাত্রী দেবতা ’ , ‘ মন্বন্তর ’, ‘ আরােগ্য নিকেতন ’ , ‘ বিচিত্রা
পুরস্কাররবীন্দ্র পুরস্কারসাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারজ্ঞানপীঠ পুরস্কার পদ্মভূষণ
কবিতাত্রিপত্র
মৃত্যুসেপ্টেম্বর ১৪, ১৯৭১

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্ম স্থান ও পিতামাতা: Birth Place And Parents Of Tarasankar Bandyopadhyay

আধুনিককালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জন্ম ১৩০৫ বঙ্গাব্দে (১৮৯৮ খ্রিঃ) বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে এক ছোট জমিদার পরিবারে। পিতার নাম হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মাতা প্রভাবতী দেবী।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর শিক্ষাজীবন: Tarasankar Bandyopadhyay’s Educational Life

লাভপুর গ্রামের উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয় থেকে ১৯১৫-১৬খ্রিঃ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রথম জীবন: Tarasankar Bandyopadhyay’s Early Life

এই সময়েই নিজ গ্রামের উমাশশী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিবাহের পর তারাশঙ্কর পড়াশোনার জন্য কলকাতায় এলেন। প্রথমে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে এবং পরে সাউথ সুবার্বন কলেজে (বর্তমান নাম আশুতোষ কলেজ) পড়াশোনা করেন।

এই সময় গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন। এই অপরাধে তাঁকে নিজের গ্রামেই অন্তরীণ থাকতে হয়। ফলে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর কর্ম জীবন: Tarasankar Bandyopadhyay’s Work Life

জীবিকা অর্জনের জন্য কিছুকাল কলকাতায় কয়লার ব্যবসা করেন। পরে চাকরি নিয়ে চলে যান কানপুরে। এই সময়েই বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে তাঁর পদযাত্রার সূত্রপাত হয়।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর রচনা: Written by Tarasankar Bandyopadhyay

১৯২৬ খ্রিঃ প্রথম প্রকাশিত হয় কবিতার বইপত্র। কাব্যরচনা দিয়ে শুরু করলেও অল্প সময়ের মধ্যেই নাটকের জগতে তাঁর উত্তরণ ঘটল। রচনা করলেন মারাঠা-তর্পণ নাটক। প্রায় একই সময়ে কল্লোল পত্রিকায় প্রকাশিত হল রসকলি গল্প।

ইতিমধ্যে দেশজুড়ে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ তারাশঙ্কর আন্দোলনে যোগদান করেন ও কারারুদ্ধ হন ১৯৩০ খ্রিঃ।

পরের বছর দেশসেবার ব্রত গ্রহণ করেন। কে বেরিয়ে সাহিত্য সাধনার সেই থেকে শুরু হয় নিরবচ্ছিন্ন সাহিত্য চর্চা। দেশের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যপত্র যেমন কল্লোল, কালিকলম, উপাসনা, বঙ্গশ্রী, শনিবারের চিঠি, প্রবাসী, দেশ, ভারতবর্ষ, বসুমতী, পরিচয়, প্রভৃতিতে নিয়মিত লেখা প্রকাশিত হতে থাকে।

আমৃত্যু সাহিত্যসাধনায় রত থেকে তারাশঙ্কর আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।

তারাশঙ্করের সাহিত্যের প্রতি পরতে মিশে আছে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। বীরভূমের লালমাটি আর তার মানুষকে তিনি নিপুণ দক্ষতায় উপস্থিত করেছেন বাংলা সাহিত্যে।

নিজে জমিদার বাড়ির সন্তান বলে জমিদারদের ক্ষয়িষ্ণু জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে সাধারণ মানুষের বিশেষতঃ আঞ্চলিক মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতা সংযুক্ত হওয়ায় তাঁর রচনা বাংলা সাহিত্যে এক নতুন মাত্রা যোজনা করে।

এরই ফলশ্রুতি দেখা যায় গণদেবতা, মন্বন্তর, হাঁসুলীবাঁকের উপকথা, ডাক হরকরা, আরোগ্য নিকেতন, কবি, কীর্তিহাটের কড়চা প্রভৃতি অনবদ্য রচনাগুলিতে।

তারাশঙ্করের সাহিত্যের প্রধান অংশ জুড়ে আছে বেদে, পটুয়া, মালাকার, লাঠিয়াল, চৌকিদার, ডাক হরকরা প্রভৃতি গ্রামীণ চরিত্র।

এছাড়া বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, বিশ্বযুদ্ধ ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা, দেশবিভাগ, অর্থনৈতিক কাঠামো ও সামাজিক অবস্থার শোচনীয় বিপর্যয়, অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিস্তার, যুব সমাজের ক্রোধ; – অস্থিরতা, বিদ্রোহ প্রভৃতি ঘটনা।

তারাশঙ্করের অনেক গল্প ও উপন্যাস চলচ্চিত্র ও নাটকে রূপায়িত হয়ে সাফল্য লাভ করেছে। কালিন্দী, দুই পুরুষ, আরোগ্য নিকেতন, কবি প্রভৃতি এদিক থেকে উল্লেখযোগ্য।

কালিন্দীর নাট্যরূপ তিনি নিজেই দিয়েছেন। তাঁর কবি উপন্যাসের স্বরচিত গানগুলিই তাঁর কাব্যপ্রতিভার পরিচয় বহন করে।

এছাড়াও তিনি ছন্দোবদ্ধ পঙক্তির আদর্শবাদী ও নীতিমূলক কবিতাও কিছু রচনা করেছেন। অর্থের প্রয়োজনে শেষ দিকে কিছুদিন দৈনিকপত্রে সাংবাদিকের কলম লিখেছেন।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর পুরস্কার ও সম্মান: Tarasankar Bandyopadhyay’s Awards And Honors

শেষ বয়সে কিছু চিত্রও এঁকেছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎ স্মৃতি পুরস্কার ও জগত্তারিণী পদক, রবীন্দ্র পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ উপাধি এবং জ্ঞানপীঠ সাহিত্য পুরস্কার লাভ তাঁর সাহিত্য জীবনের উজ্জ্বল স্বীকৃতি।

১৯৫২ খ্রিঃ তারাশঙ্কর বিধান পরিষদের সদস্য হন। ১৯৫৫ খ্রিঃ তিনি ভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে চীন ভ্রমণ করেন।

১৯৫৭ খ্রিঃ তাসখন্দে এশীয় লেখক প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন ও মস্কো সফর করেন। তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ছিলেন।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর মৃত্যু: Tarasankar Bandyopadhyay’s Death

১৯৭১ খ্রিঃ পরলোক গমন করেন।

আরও পড়ুন-

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম গল্প কোনটি?

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস চৈতালী ঘূর্ণি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। তাঁর প্রথম পর্বের অন্যান্য উপন্যাসগুলি হল পাষাণপুরী (১৯৩৩), নীলকণ্ঠ (১৯৩৩), রাইকমল (১৯৩৫), প্রেম ও প্রয়োজন (১৯৩৬) ও আগুন (১৯৩৮)।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিখ্যাত উপন্যাস কোনটি?

তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস কালিন্দী (১৯৪০), গণদেবতা (১৯৪৩), মন্বন্তর (১৯৪৩), পঞ্চগ্রাম (১৯৪৪), কবি (১৯৪৪), সন্দীপন পাঠশালা (১৯৪৬) ও অভিযান (১৯৪৬)।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম?

কামন্দক, হাবু শর্মা

Leave a Comment