Justice Abhijit Gangopadhyay Biography in Bengali – বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জীবনী

Justice Abhijit Gangopadhyay একজন ভারতীয় বাঙালি বিচারক। বর্তমানে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি। আজ আমরা এই পোস্টার মধ্যে চাকরি প্রার্থীদের ভগবান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনী নিয়ে আলোচনা করব। চলুন দেখে নেওয়া যাক।

Justice Abhijit Gangopadhyay Biography in Bengali – বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জীবনী

নামঅভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
জন্ম১৯৬২
বাবার নামরামা প্রসাদ গাঙ্গুলী
মায়ের নামশেফালী গাঙ্গুলী
বড়ো ভাইআদিত্য গাঙ্গুলী
জাতীয়তাভারতীয়
ধর্মহিন্দু
কলেজHazra Law College
পেশাআমলা, আইনজীবী (বর্তমানে)

আমাদের সমাজে আদর্শনিষ্ঠ, সৎ ও নীতিপরায়ণ মেধাবী প্রতিবাদী চাকুরীপ্রার্থীরা পড়ে রয়েছে দিনের পর দিন ওই আস্তাকুঁড়ে। হয়তো ওনার হাত ধরেই সামনে আসবে ওই সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের পরিপন্থী দুর্নীতির সেই অদৃশ্য কালো হাত।

স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাসে একবিংশ শতকের সমস্ত শ্রেণীর চাকুরিপ্রার্থীরর কাছে ঈশ্বরের অগ্রদূত হলেন একজন বাঙালী আইনজীবি তথা বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয়।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের শিক্ষা জীবন : Education of Justice Abhijit Gangopadhyay

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার বাংলা মিডিয়াম স্কুল ‘মিত্র ইনস্টিটিউশনে’ (মেন) স্কুল জীবনের পড়াশোনা করেন। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে স্কুল শিক্ষা সমাপ্ত করে ‘হাজরা ল কলেজে’ পাঁচ বৎসর আইন নিয়ে শিক্ষা অধ্যয়ন করেন। এ সময় তিনি ‘অমিত্র চন্দ্র’ নামক বাংলা রঙ্গমঞ্চের সাথেও যুক্ত ছিলেন।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কর্মজীবন জীবন : Career Life of Justice Abhijit Gangopadhyay

গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় তার কর্মজীবন শুরু করেন উত্তর দিনাজপুর জেলার পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিসের ‘এ’ গ্রেডের অফিসার হিসেবে। কিন্তু পরবর্তীতে সরকারী স্তরের দুর্নীতির কারণে তিনি চাকুরী থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য আইনজীবি হিসাবে অধ্যায়ন শুরু করেন। এখানে তিনি দীর্ঘ ১০ বছর আইনজীবি হিসাবে কাজ করেন।

এরপর ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ২রা মে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন এবং ২০২০ খ্রিস্টাব্দে ৩০শে জুলাই হতে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। এযাবৎ তিনি এই আসনে অধিষ্ঠিত হয়ে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রায় দান করে চলেছেন।

উল্লেখযোগ্য রায় দান

৬০ ঊর্ধ্ব আইনজীবী হিসেবে তিনি যে কয়েকটি রায় দান করেছেন তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় তিনি আগ্রাসন মনোভাবের দ্বারা একের পর এক উল্লেখযোগ্য রায় দিতে থাকেন।

৭৬ বৎসর বয়সের স্কুল শিক্ষিকার দীর্ঘ পঁচিশ বৎসরের বকেয়া বেতন পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষিকার ১২ দিনের বেতন অন্যায়ভাবে কেটে নেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ কেড়ে নিয়ে, তার বকেয়া নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়ে বিচার ব্যবস্থায় বিচারকের মানবিক মুখের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

২০২১ সালের নভেম্বর থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের একাধিক নির্দেশনা দেন। এরপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংকটাপন্ন হয়ে দাঁড়ালে গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের কথিত অনিয়মের ক্ষেত্রে ডিভিশন বেঞ্চের পদক্ষেপের বিষয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন। ২০২২ সালের ১৩ই এপ্রিল তিনি এমনকি আদালত বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়।

রাজনৈতিক শাসনাধীন প্রাপ্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রাপ্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তদন্তকারী অনুসন্ধান তারই রায় দানের ফল।

বিচারপতির ফিটনেসের রহস্য

ফিট থাকার জন্য নির্দিষ্ট একটি রুটিন মেনে চলেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী। সকাল ৯টা নাগাদ ঘুম থেকে ওঠেন বিচারপতি মহাশয়। তার পর শুরু আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি। আলাদা করে প্রাতরাশ করেন না। আদালতে বেরোনোর আগে রুটি এবং অল্প তেলে রান্না করা বিভিন্ন মরসুমি সব্জি দিয়ে তৈরি তরকারি খেয়ে নেন। ডায়াবিটিস আছে। দু’বেলা ইনসুলিনও নিতে হয়। ফলে ভাত খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন সেই ১৯৯৫ সালে! পরিবারের এক সদস্য অবশ্য বললেন, রবিবার অল্প ভাত খান।

চা খেতে অসম্ভব ভালবাসেন। সারা দিনে কম করে অন্তত ৩০ কাপ চা চা-ই তাঁর। রাতে খাওয়ার পাতে বিভিন্ন সময় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে থাকে লুচি, পরোটা বা রুটি। পারিবারিক সূত্রের দাবি, বিচারপতির প্রিয় খাবার নাকি বিরিয়ানি এবং কচুরি-আলুর দম। ‘ফিট’ থাকতে আলাদা করে কোনও শরীরচর্চা করেন না। মনে করেন, শরীর থাকলে খারাপ হবে।

দায়িত্ব সামলাতে হবে বলে আলাদা করে সুস্থ থাকার কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে, এমনটা তিনি মনে করেন না। এ সব অবশ্য তিনি ঠাট্টা করে বন্ধুমহলে বলে থাকেন। আর বন্ধুরা বলেন, তাঁর গম্ভীর মুখের আড়ালে লুকিয়ে আছেন এক আদ্যোপান্ত রসিক মানুষ।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কর্মজীবন জীবন : Career Life of Justice Abhijit Gangopadhyay

তিনি বই পড়তে বেজায় ভালোবাসেন। তবে অবশ্যই তা আইনের বই নয়! ইংরেজি এবং বাংলা সাহিত্যের সমস্ত রসাস্বাদন করেন। একসঙ্গে কয়েক ঘন্টায় দু’তিনটে বই পড়েন। যখন যেটা ইচ্ছে হয় পড়েন। তবে পছন্দের কবি জীবনানন্দ এবং জয় গোস্বামী। সময় পেলেই ডুব দেন তাঁদের কবিতায়।

বই পড়া ছাড়াও, সিনেমা দেখতে তাঁর ভীষণই ভালো লাগে। বিচারপতির পছন্দের সিনেমার তালিকায় রয়েছে ‘কোনি’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ এবং সদ্যপ্রয়াত তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘দাদার কীর্তি’। ওটিটি নয়, বড় পর্দাতে সিনেমা দেখাই বেশি পছন্দ তাঁর। কানাঘুষোয় জানা গেল, শেষ ছবি দেখেছেন ‘কাশ্মীর ফাইলস’। কয়েকদিন আগে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বলে সহকর্মীর ধমক খান বলে সূত্রের খবর। তবে তা নিছকই মজার ছলেই, তা বিচারপতি নিজেই জানান।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উক্তি

বর্তমানে বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা গুলির সঙ্গে যুক্ত আছেন। বিশেষ কারনে দুটি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে মামলা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

পরিশেষে বলাযায়

সকল মানুষের আশার আলো হয়ে এসেছেন অভিজিৎ গাঙ্গুলী। বর্তমানে তাঁকে ঘিরেই মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষা। ভালো থাকুন আমাদের প্রিয় বিচারপতি মহাশয়। অভিজিৎ গাঙ্গুলি, যুগ যুগ জিও!

Leave a Comment