John Milton Biography in Bengali – জন মিলটন এর জীবনী

John Milton Biography : আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ইংরাজি ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্যকার জন মিলটন -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

জন মিলটন এর জীবনী – John Milton Biography in Bengali

নামজন মিলটন
জন্ম9th ডিসেম্বর 1608
জন্মস্থানব্রেড স্ট্রিট, চিপসাইড, লন্ডন, ইংল্যান্ড
পিতাজন মিল্টন (John Milton)
মাতাসারাহ জেফরির (Sarah Jeffrey)
জাতীয়তাযুক্তরাজ্য
পেশাকবি, প্রাবন্ধিক, সরকারী কর্মচারী
মৃত্যু8th নভেম্বর 1674 (বয়স 65)

জন মিলটন কে ছিলেন? Who is John Milton?

ইংরাজি ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য Paradise Lost– এর রচয়িতা এবং বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক জন মিলটন।

জন মিলটনের জন্ম: John Milton’s Birthday

জন্ম ১৬০৮ খ্রিঃ ৯ ই ডিসেম্বর লন্ডনে।

মিলটনের পিতা ছিলেন সংগীতানুরাগী। তাঁর স্নেহচ্ছায়ায় থেকে গীতে ও গানে লালিত হয়ে তাঁর মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই কবিতার প্রতি অনুরাগ জন্ম নেয়। স্কুলে পড়বার সময় থেকেই তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন।

জন মিলটনের শিক্ষাজীবন: John Milton’s Educational Life

পিতা পুত্রের প্রতিভার পরিচয় পেয়ে তাঁর উপযুক্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেন। স্কুলে ভর্তি হবার আগে টমাসইয়ং নামে স্কটল্যান্ডের অধিবাসী একজন সাহিত্য রসিক ব্যক্তি তাঁর গৃহশিক্ষক ছিলেন। তাঁর উৎসাহ ও প্রেরণায় পড়াশুনার প্রতি মিলটনের গভীর অনুরাগ জন্মে।

তাঁর যখন বারাে বছর বয়স সেই সময়েই তিনি অনেক রাত পর্যন্ত জেগে পড়াশুনা করতেন। ১৬২০ খ্রিঃ বারাে বছর বয়সে মিলটন সে সময়ের বিখ্যাত সেন্ট পলস স্কুলে ভর্তি হন।

এই স্কুলের শিক্ষাগুণে এবং পারিবারিক সংস্কৃতির আবেষ্টনীর মধ্যে তাঁর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশলাভ করতে লাগল।

ইংরাজিতে ও ল্যাটিন ভাষায় তিনি কবিতা রচনা করতে লাগলেন। ১৬২৫ খ্রিঃ সেন্ট পলস স্কুলের পড়া শেষ করে মিলটন ভর্তি হন কেম্বুিজে ক্রাইস্ট কলেজে।

এখানে তিনি সাত বছর পড়াশােনা করেন। ১৬৩২ খ্রিঃ তিনি এম -এ ডিগ্রি লাভ করেন।

জন মিলটনের কর্ম জীবন: John Milton’s Work Life

এই সময়ে তাঁর কাব্যগ্রন্থ At a solemn Music এবং Nativity Hymn প্রকাশিত হয়। মিলটন খ্যাতি লাভ করেন।

কলেজের পড়া শেষ করে মিলটন চলে আসেন বাকিংহামে শহরের হােরটন নামকস্থানে। তাঁর পিতা সেইসময় সেখানেই বাস করছিলেন তখন তিনি নিশ্চিন্তে পড়াশােনা ও কাব্যচর্চায় মনােনিবেশ করলেন।

মিলটনের পিতার ইচ্ছা ছিল তার পুত্র কলেজের পড়া শেষ করে ধমর্যাজকের পদ গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন- মাদার টেরিজা জীবনী

কিন্তু মিলটনের কবি প্রতিভাকে সে পথে যেতে দিল না। তিনি হােরটন- এর মুক্ত উদার প্রকৃতির মধ্যে গভীর চিন্তাশীলতার পথ খুঁজে নিয়ে কাব্য চর্চায় ডুবে রইলেন।

এই সময়ে তিনি যে সব কাব্য রচনা করেন তার মধ্যে Allegar, II Penseroso, Areades, Comus এবং Lycidas প্রভৃতি উল্ল্যেখযোগ্য।

জন মিলটনের বিবাহ জীবন ও পরিবার: John Milton’s Marriage Life And Family

১৬৩৮ খ্রিঃ কিছুকালের জন্য দেশভ্রমণে বেরিয়ে ইতালি, সুইজারল্যান্ডও ফ্রান্স ঘুরে আসেন। ১৬৪২ খ্রিঃ মেরী পাওয়েলকে বিয়ে করেন। এই বিবাহ স্বল্পকাল স্থায়ী হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর মিলটন The Doctrine and Discipline of Divarce নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। পুস্তকটি নিষিদ্ধ হয়। পরে অবশ্য ১৬৪৪ খ্রিঃ মিলটনের বিখ্যাত Areopagitica গ্রন্থে পুনঃ প্রকাশিত হয়।

মিলটন এই সময় থেকেই রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ব্যাপারে জড়িয়ে পড়তে থাকেন। তিনি ধর্ম সংস্কার, শিক্ষা, বিবাহ ইত্যাদি নানা বিষয়ে প্রবন্ধ লিখতে থাকেন।

এই সব প্রবন্ধাদির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য Reformation of Church Discipline in England. দেশে শিক্ষার উন্নতি কিভাবে হতে পারে এই বিষয়ে মিলটন তাঁর সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করেন Tracte of Education নামক পুস্তিকায়।

এটি প্রকাশিত হয় ১৬৪৪ খ্রিঃ। এরপর মুদ্রাযন্ত্রের স্বাধীনতা বিষয়ে তাঁর Areopagitica গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। পরের বছরেই প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতার সঙ্কলন গ্রন্থ । ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড রাজশক্তিকে হারিয়ে ক্রমওয়েল পার্লামেন্টের শাসন প্রবর্তন করলেন।

আরও পড়ুন- প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনী

ক্রমওয়েলের অনুসারী লােকদের বলা হত পিউরিটান। এরা ছিলেন বিদ্বান, চরিত্রবান এবং সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তি। মিলটন ছিলেন এই পিউরিটানদের দলভুক্ত।

রাজ্যের বড় বড় সমস্যার ব্যাপারে ক্রমওয়েল মিলটনের পরামর্শ গ্রহণ করতেন। এই সময় তিনি সরকারের ল্যাটিন সেক্রেটারির পদ গ্রহণ করেন।

ল্যাটিন, গ্রীক এবং হিব্রু ভাষায় মিলটনের অসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল। বিদেশীয় রাষ্ট্রের রাজনৈতিক কাজে তিনি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য মিলটনের কাব্যরচনার কাজ বিঘ্নিত হয়েছিল। মাত্র কয়েকটি সনেট ছাড়া আর কোন কবিতাই তিনি রচনা করতে পারেন নি।

১৬৫০ খ্রিঃ রাষ্ট্রীয় কাজ থেকে মুক্ত হয়ে তিনি আবার স্বাধীন ভাবে সাহিত্য চর্চায় আত্মনিয়ােগ করেন। ১৬৫১ খ্রিঃ থেকেই মিলটনের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছিল।

১৬৫৬ খ্রিঃ দ্বিতীয় বার বিবাহ করেন। অল্প কিছুদিন পরেই স্ত্রীর মৃত্যু হয়। ততদিনে তিনি সম্পূর্ণ ভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। এই অবস্থাতেই ১৬৬২ খ্রিঃ তৃতীয়বার বিবাহ করেন।

জন মিলটনের রচনা: Written by John Milton

১৬৫৮ খ্রিঃ মিলটন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Paradise Lost রচনা শুরু করেন। ১৬৬৭ খ্রিঃ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।

গ্রন্থের দ্বিতীয় অংশ Paradise Regained প্রকাশিত হয় ১৬৭১ খ্রিঃ। এই বছরেই তাঁর বিখ্যাত কাব্য-নাটক Samson Agonistes প্রকাশিত হয়।

দৃষ্টিশক্তিহীন কবির লিখবার ক্ষমতা ছিল না। এই সময়ে তাঁর সহায় ছিল তিন কন্যা।

পালা করে তিনটি মেয়েকে তিনি মুখে মুখে বলে যেতেন, তারা লিখে নিত। এই ভাবেই জন্ম হয়েছিল জগতের অমর কাব্যগ্রন্থগুলির অন্যতম Paradise Lost।

আরও পড়ুন- হরগোবিন্দ খোরানা জীবনী

বাইবেলের আদম আর ইভের স্বর্গচ্যুতির বিবরণকে অবলম্বন করে অন্ধ কবি মিলটন এই কাব্যগ্রন্থটি রচনা করেন।

বাইবেলের সেই সামান্য কাহিনীর মধ্যে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন মানুষের অনাবিল আত্মার আকুতিকে। মিলটন তাঁর জীবনব্যাপী দুঃখ তাপে দগ্ধ হয়েছেন।

কিন্তু সবকিছুকেঅবহেলা করে তিনি স্বীয় প্রতিভা বলে বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধতর করে গেছেন।

জন মিলটনের মৃত্যু: John Milton’s Death

তাঁর সৃষ্টি জগতের মানুষের কাছে আনন্দ, শক্তি ও আলাের উৎস স্বরূপ হয়ে আছে। ১৮৭৪ খ্রিঃ মিলটন চিরশান্তিধামে মহাপ্রয়াণ করেন।

Leave a Comment