ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর জীবনী – Florence Nightingale er Jboni Bangla

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর জীবনী নিয়ে আজকের এই পোস্টটা। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম Pioneering modern nursing ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল (Florence Nightingale) -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর জীবনী – Florence Nightingale er Jboni Bangla

নামফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল
জন্ম১২ মে ১৮২০ Florence, Grand Duchy of Tuscany
পিতামাতার নামপিতা উইলিয়াম এডওয়ার্ড নাইটিঙ্গেল এবং মাতা ফ্রান্সিস নাইটিঙ্গেল
পরিচিতির কারণPioneering modern nursing
পুরস্কারRoyal Red Cross (1883), Lady of Grace of the Order of St John (LGStJ), Order of Merit (1907)
মৃত্যু১৩ আগস্ট ১৯১০ (বয়স ৯০) Park Lane, London, United Kingdom

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল কে ছিলেন? – Who was Florence Nightingale?

রুগী ও আর্তের সেবা-পরিচর্যাকে ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন যে মহীয়সী মহিলা এবং এই সেবাব্রতকে ছড়িয়ে দিয়েছেন পৃথিবীর দেশে দেশে, যাঁর প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে আধুনিক নার্সিং ব্যবস্থা, তাঁর নাম ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। Lady with the lamp বা দীপ হাতে রমণী তাঁরই প্রতীকী নাম।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর জন্ম – Florence Nightingale Birthday –

১৮২০ খ্রিঃ ১২ই মে ইটালির ফ্লোরেন্স শহরে জন্ম ফ্লোরেন্সের। তাঁর পিতামাতা জন্মস্থানের নাম অনুসারে কন্যার নাম রেখেছিলেন।

ইংলন্ডের ধনী ও অভিজাত ব্যক্তিদের অন্যতম ছিলেন ফ্লোরেন্সের বাবা। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল উদার তাই শিশু বয়স থেকেই মেয়েকে সঙ্গীত, ছবি আঁকা ও ভাষা শিক্ষা দেবার উপযুক্ত ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। ছেলেবেলাতেই ফ্লোরেন্স আয়ত্ত করতে পেরেছিলেন লাটিন, গ্রিক, ইটালিয়ান, ফরাসী ও জার্মান ভাষা।

ফ্লোরেন্সের ছেলেবেলা কেটেছে ইংলন্ডে ডার্বিশায়ার অঞ্চলে তাঁদের পুরনো বাড়িতে।

গ্রাম্য পরিবেশের এই বাড়িতে থাকার সময়েই জীবজন্তুর প্রতি তাঁর গভীর মমত্ব সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কেবল জীবজন্তুই নয়, বাড়ির বা প্রতিবেশীদের বাড়িতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সবার আগে তাদের সেবা করার জন্য এগিয়ে যেতেন ফ্লোরেন্স।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর শিক্ষাজীবন – Florence Nightingale Education Life

ফ্লোরেন্সের যখন ১৭ বছর বয়স, তখন উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তাঁকে পাঠানো হল লন্ডন শহরে। কিন্তু গতানুগতিক শিক্ষার প্রতি কোন আকর্ষণ ছিল না তাঁর। সেবাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করবেন এই ছিল তাঁর অভিলাষ।

সেই যুগে সেবা বা nursing বলে সুসংগঠিত কোন পেশা ছিল না। সেবার অভাবে হাসপাতালগুলির অবস্থা ছিল খুবই করুণ। সেবার কাজ বলতে যা ছিল তার সব কিছুই করত সমাজের নিচুতলার মানুষেরা। সামাজিক বা পেশাগত কোন সম্মান তারা পেত না। তাই মেয়ের ইচ্ছার কথা শুনে ফ্লোরেন্সের পিতামাতা খুবই আহত হলেন।

অভিজাত ঘরের একটি মেয়ের মন কী করে এমন একটি নীচুস্তরের বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়, এ কথা ভেবে তাঁরা খুবই বিব্রত বোধ করলেন। নানাভাবে মেয়েকে বোঝাবার চেষ্টা করলেন তাঁরা। শেষে মেয়ের মনোভাব পরিবর্তনের জন্য তাকে পাঠিয়ে দিলেন দেশ ভ্রমণে।

ফ্লোরেন্সকে পাঠানো হয়েছিল ব্র্যাকব্রিজ দম্পতির সঙ্গে। তাঁরা প্রথমে গেলেন ইতিহাস প্রসিদ্ধ রোম নগরীতে।

স্বাভাবিকভাবেই সেখানে সকলে প্রাচীন শিল্পকলা ও ভাস্কর্যাদি দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।

ফ্লোরেন্স কিন্তু সেসবে কিছুমাত্র আকর্ষণ বোধ করলেন না। তিনি গেলেন রোমান ক্যাথলিক কনভেন্টে সন্ন্যাসিনীদের সেবামূলক কাজ দেখতে। দশদিন সেখানে থেকে ফ্লোরেন্স তাঁদের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখলেন এবং সেবার কাজে এখানেই প্রশিক্ষণ নেবেন মনস্ত করলেন।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর নার্সিং শিক্ষা

সেই সময়ে নার্সিং শিক্ষা দেবার জন্য একটি স্কুল ছিল জার্মানীর এক শহরে। সেটি পরিচালনা করত সন্ন্যাসিনীরা। ফ্লোরেন্স তিন মাস সেখানে থেকে প্রশিক্ষণ নিলেন।

এই সময়েই তিনি সংকল্প নেন, ইংলন্ডে ফিরে গিয়ে এই ধরনের একটি স্কুল খুলবেন।

ব্র্যাকব্রিজ পরিবারের সঙ্গে ইউরোপ ভ্রমণের সময়ে ফ্লোরেন্সের পরিচয় হয় যুবক সিডনি হার্বার্টের সঙ্গে। হার্বার্ট ছিলেন ইংলন্ডের এক আর্ল-এর পুত্র। ফ্লোরেন্সের বয়স তখন ২৮ বছর।

সুগঠিত চেহারার সুদর্শন হার্বার্টের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হলেন ফ্লোরেন্স। প্রথম আলাপে হাবার্টও উপলব্ধি করলেন ফ্লোরেন্সের প্রতিভা ও তাঁর অন্তস্থিত আকাঙ্ক্ষা।

আরও পড়ুন- আর্কিমিডিস জীবনী

তিনি সম্মান জানালেন ফ্লোরেন্সের পবিত্র ব্রতকে, উৎসাহিত করলেন আন্তরিক ভাবে।

স্বাভাবিকভাবেই দুজনের মধ্যে গড়ে উঠল প্রগাঢ় বন্ধুত্ব। আর এই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই মানবকল্যাণে আত্মোৎসর্গের প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হল দুটি জীবন।

পরের বছর, ১৮৪৯ খ্রিঃ, ২৯ বছর বয়সে আবার দেশভ্রমণে বের হলেন ফ্লোরেন্স। এই যাত্রায় তাঁর সঙ্গে প্যারিসে পরিচয় হল সেন্ট ভিনসেন্ট সোসাইটির দুজন সন্ন্যাসিনীর।

এই সোসাইটির একটি বড় হাসপাতাল ছিল আলেকজান্দ্রিয়ায়। ফ্লোরেন্স সেখানে গিয়ে প্রত্যক্ষ করলেন হাসপাতাল পরিচালনার কাজ।

এরপর ইউরোপের নানাদেশ ঘুরে তিনি দেখলেন বিভিন্ন হাসপাতালের সেবামূলক কাজকর্ম ও সংগঠন। এই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভের পর তিনি পড়ে ফেললেন নার্সিং-এর সামান্য কয়খানি বই, যা পাওয়া যেত তার সব। এমনি ভাবে যেমন তিনি নিজেকে প্রস্তুত করতে লাগলেন বাইরের দিক থেকে, তেমনি মনের দিক থেকেও তিনি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করে নিলেন নিজেকে। সংকল্প নিলেন, ইংলন্ডে ফিরে গিয়ে সেবার আদর্শকেই জীবনে অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করবেন।

বিদেশ ভ্রমণে দীর্ঘদিন কাটিয়ে বাড়িতে ফিরে এলেন ফ্লোরেন্স। তাঁর বাবা মা ভাবলেন এবারে তাঁদের মেয়ে নিশ্চয় অভিজাত পরিবারের কোন যুবককে বিয়ে করে সংসারজীবন শুরু করবে।

কিন্তু ফ্লোরেন্স বললেন, সংসার-বন্ধন নয় আমি চাই সেবিকা হতে। বাবা-মার সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল। এমনকি তাঁদের চোখের জলও বিচলিত করতে পারল না ফ্লোরেন্সকে।

তিনি তাঁর সংকল্পে অটল রইলেন। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বাবা-মা মেয়ের ইচ্ছায় সম্মতি জানালেন।

ইংলন্ডের হার্লে স্ট্রিটে চাকরি

সেই সময়ে ইংলন্ডের হার্লে স্ট্রিটে মেয়েদের জন্য একটি হাসপাতাল চালু হয়েছিল। ফ্লোরেন্স সেই হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্ট পদে যোগ দিলেন।

কাজে যোগদান করেই ফ্লোরেন্সের প্রথমে যা নজরে পড়ল তা হল হাসপাতালের পরিবেশ। তিনি লক্ষ্য করলেন নোংরা আবর্জনা ভরা স্যাঁতসেতে অবস্থা চারপাশে, এর মধ্যে রুগীদের স্বাস্থ্য ভাল হওয়া তো দূরের কথা নতুন করে রোগাক্রান্ত হওয়াই তাদের পক্ষে স্বাভাবিক।

তাছাড়া রুগীদের ওষুধ দেওয়া ছাড়া সেখানে আর কোনও স্বাস্থ্যবিধিই মেনে চলা হয় না।

ফ্লোরেন্সের নির্দেশে শীঘ্রই হাসপাতাল চত্বরে পরিচ্ছন্নতা ফিরে এলো। সমস্ত আবর্জনা পরিষ্কার করা হল, বন্ধ দরজা জানালাগুলো খুলে দেওয়া হল আরো বেশি করে মুক্ত বাতাস চলাচলের জন্য। প্রয়োজনে স্থানে স্থানে নতুন জানালা দরজা লাগানো হল।

আরও পড়ুন- চিকিৎসক জীবক জীবনী

তারপর তিনি নজর দিলেন রুগীদের শুশ্রূষার দিকে।

ফ্লোরেন্স বিশ্বাস করতেন, কেবলমাত্র ওষুধই রুগীকে রোগমুক্ত করার পক্ষে যথেষ্ট নয়। উপযুক্ত সেবা-পরিচর্যাই পারে রুগীকে মানসিকভাবে সবল করে তুলতে। আর মানসিক সুস্থতাই শারীরিক সুস্থতাকে ফিরিয়ে এনে রুগীকে নবজীবন দান করে।

ফ্লোরেন্সের চেষ্টায় সেবা-পরিচর্যার উপযুক্ত ব্যবস্থা হবার পর ফলও পাওয়া গেল সঙ্গে সঙ্গে। হাসপাতালে রুগীর মৃত্যুর হার কমে গেল।

ফ্লোরেন্সের প্রবর্তিত সেবা-প্রধান চিকিৎসা ব্যবস্থার সুনাম অল্পদিনেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। লন্ডনের বড় বড় হাসপাতাল থেকে ফ্লোরেন্সের ডাক আসতে লাগল। সব প্রতিষ্ঠানই চাইছিল, তাঁর হাতে হাসপাতাল পরিচালনার ভার ছেড়ে দিতে।

সেই সময়ে কিংস কলেজ হাসপাতাল ছিল ইংলন্ডের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল।

ফ্লোরেন্স এই হাসপাতালকেই তাঁর কাজের উপযুক্ত পরিবেশ বিবেচনা করলেন। কেন না, এখানেই তিনি পাবেন তাঁর শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাবার উপযুক্ত সুযোগ।

কিংস কলেজ হাসপাতালের কাজে যোগদানের জন্য তিনি মনস্থির করে ফেললেন। কিন্তু সেই সময়েই ঘটল অপ্রত্যাশিত এক বিপর্যয়। ইংলন্ড জড়িয়ে পড়ল এক বিধ্বংসী যুদ্ধে।

আরও পড়ুন- রানী রাসমণি জীবনী

সময়টা ১৮৫৪ খ্রিঃ। রাশিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তুরস্কের বিরুদ্ধে। বিপন্ন তুরস্ককে সাহায্য করবার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ইংলন্ডের সেনাবাহিনী। ক্রিমিয়ার প্রান্তরে এই ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছিল বলে ইতিহাসে তার নাম হয়েছে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ।

যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকেই যুদ্ধক্ষেত্রের খবরাখবরও ছাপা হতে লাগল খবরের কাগজে। যুদ্ধক্ষেত্র ফেরত এক সংবাদদাতা জানালেন, উপযুক্ত সেবা-পরিচর্যার ব্যবস্থার অভাবে যুদ্ধে আহত সৈনিকরা অকালে প্রাণ হারাচ্ছে।

এই খবর প্রচারিত হবার সঙ্গে সঙ্গে দেশ জুড়ে শুরু হল প্রতিক্রিয়া। জনসাধারণের মধ্যে দেখা দিল ক্ষোভ উত্তেজনা। চাপ সৃষ্টি হল উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মচারীদের ওপরে।

Florence nightingale এর আহত সৈনিক দের সেবা

সিডনি হার্বার্ট তখন প্রতিরক্ষা দপ্তরের সেক্রেটারী। তিনি ফ্লোরেন্সকে অনুরোধ করলেন যুদ্ধে আহত সৈনিকদের উপযুক্ত তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নেবার জন্য।

দেশের সেবার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বার এই তো উপযুক্ত সময়। ফ্লোরেন্স আর পেছনে ফিরে তাকালেন না।

যুদ্ধক্ষেত্রের ভয়, আত্মীয় পরিজনের বাধা সবকিছু উপেক্ষা করে তিনি হার্বার্টের অনুরোধে সাড়া দিলেন।

সঙ্গে সঙ্গে ফ্লোরেন্সকে পাঠিয়ে দেওয়া হল তুরস্কের হাসপাতালের পরিচালনার দায়িত্বে।

লন্ডনের এক সম্ভ্রান্ত ধনী পরিবারের শিক্ষিত সুন্দরী মহিলা যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের সেবার কাজে যোগ দিয়েছেন, এই সংবাদ প্রচারিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই অভাবিত প্রতিক্রিয়া দেখা দিল চতুর্দিকে।

বিস্ময়ে শ্রদ্ধায় অভিভূত দেশের সর্বশ্রেণীর জনগণ ফ্লোরেন্সের কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। জড়ো হতে লাগল তাঁদের পাঠানো দান আর উপহার।

আরও পড়ুন- হেরোডোটাস জীবনী

কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের সেবাশুশ্রূষার জন্য তখন সবচেয়ে বেশি অভাব ছিল নার্সিং-এর উপযুক্ত সহযোগীর।

ফ্লোরেন্স রোমান ক্যাথলিক সিস্টারস চার্চের সভ্য ও বিভিন্ন হাসপাতালের নার্স মিলিয়ে মোট ৩৮জন মহিলার একটি সেবাদল গঠন করলেন।

সব ভাল কাজেই থাকে অনিবার্য বাধা। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হল না। শীঘ্রই ফ্লোরেন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল, তিনি সেবিকা নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন।

কিছু লোক এই নিয়ে শুরু করল হৈচৈ। শেষ পর্যন্ত এই অসমীচীন বিতণ্ডা বন্ধ করতে এগিয়ে আসতে হল স্বয়ং মহারানী ভিক্টোরিয়াকে। তিনি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ফ্লোরেন্সের স্বেচ্ছাসেবীদলের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা পাঠালেন। অমনি সব বিরূপ সমালোচনা বন্ধ হয়ে গেল।

যুদ্ধক্ষেত্রে আহতদের সেবা-শুশ্রূষার কাজের দায়িত্ব এতকাল পালন করে এসেছে পুরুষরাই। এবারে পরিস্থিতির দাবিতে মেয়েদেরই এগিয়ে আসতে হল সেবার কাজে।

কিন্তু মেয়েরা যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে পুরুষ সৈনিকদের সেবা করবে এই অবস্থা মেনে নিতে পারছিলেন না কিছু সামরিক অফিসার।

কিন্তু তাঁদের কোন সমালোচনা বা মন্তব্যই গ্রাহ্য করলেন না ফ্লোরেন্স। তিনি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ তাঁর লোকজন নিয়ে রওনা হয়ে গেলেন স্কুটারি প্রান্তরের দিকে।

আরও পড়ুন- জগদীশচন্দ্র বসু জীবনী

আহত সৈনিকদের জন্য স্কুটারিতেই গড়ে তোলা হয়েছিল সামরিক হাসপাতাল।

স্কুটারি পৌঁছতে পনেরো দিন কাটল পথে। ফ্লোরেন্স যখন তাঁর সেবাদল নিয়ে সেখানে পৌঁছলেন তখন তাঁরা সকলেই পথশ্রমে ক্লান্ত অবসন্ন।

কিন্তু কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে এক মুহূর্ত সময় নিজের বিশ্রামের জন্য ব্যয় করলেন না ফ্লোরেন্স। প্রথমেই তিনি গেলেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র দেখতে। কিন্তু সেখানকার অব্যবস্থা দেখে তিনি খুবই বিচলিত হয়ে পড়লেন। প্রয়োজনীয় সবকিছুই প্রায় নেই পর্যায়ে।

শোবার উপযুক্ত বিছানাপত্র, পরিচ্ছন্ন যথেষ্ট পোশাক, এসব কিছুই নেই রুগীদের।

খাদ্য-খাবার যা আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। সবচেয়ে বড় কথা, প্রয়োজনীয় ওষুধেরই রয়েছে অভাব।

সামরিক বিভাগের সংগ্রহে এসব কোন কিছুরই অভাব ছিল না। কিন্তু নানা বিধিনিষেধের জন্য সেসব কিছুই কাজে লাগাতে পারলেন না ফ্লোরেন্স। ফলে সঙ্গে করে যা নিয়ে এসেছিলেন তাই দিয়েই কাজ শুরু করতে হল তাঁকে।

হাসপাতালে আহত সৈনিকের সংখ্যা বাড়ার বিরাম নেই। যুদ্ধ চলছে পুরোদমে। তাই হাসপাতাল চত্বরে কেবল আহত মানুষের ভিড় আর তাদের যন্ত্রণাকাতর আর্তনাদ।

একমুহূর্ত বিলম্ব করলেন না ফ্লোরেন্স। অপ্রতুল সঙ্গতি নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়লেন আহত মানুষদের সেবার কাজে। ইতিমধ্যে ফ্লোরেন্সের নামে বাইরে থেকে কিছু কিছু সাহায্য এসে পৌঁছতে লাগল।

কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা ছিল নামমাত্র। তাই সাহায্য চেয়ে ফ্লোরেন্স দেশবাসীর কাছে আবেদন জানালেন।

আরও পড়ুন- নিকোলাস কোপার্নিকাস জীবনী

তাঁর আবেদনে সাড়া দিল সমস্ত ইংলন্ডের মানুষ। তাদের পাঠানো অর্থে গড়ে উঠল সাহায্য ভান্ডার। ইতিপূর্বে টাইমস পত্রিকার পক্ষ থেকেও খোলা হয়েছিল একটি তহবিল।

ফ্লোরেন্স প্রথমে হাত লাগালেন হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজে। কিন্তু ঝাড়ন আর তোয়ালে নিয়েই দেখা দিল সমস্যা।

সব কিছুই ছিল সরকারী দপ্তরের কর্মচারিদের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে সেগুলো পেতে গেলে যে বিধিনিষেধের বাধা অতিক্রম করা দরকার তার জন্য ব্যয় হবে দীর্ঘ সময়।

ফ্লোরেন্স অত ঝামেলায় গেলেন না। তিনি আবেদন জানালেন টাইমস তহবিলের কাছে। কিন্তু সেখানেও নানা নিয়মের কড়াকড়ি।

এদিকে আহত সৈনিকদের জন্য আশু যা প্রয়োজন তা হল পরিচ্ছন্ন পোশাক। বাধ্য হয়ে ফ্লোরেন্স স্কুটারিতে নিজেই একটি লন্ড্রী খুলে ফেললেন। এদিকে ততদিনে সাহায্য হিসেবে পোশাক তোয়ালে ইত্যাদি নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী এসে পৌঁছতে লাগল!

ফ্লোরেন্স তাঁর সহকর্মীদের নির্দেশ দিলেন, আইনের বিধি-নিষেধের কথা ভুলে গিয়ে মালের পেটি আসার সঙ্গে সঙ্গেই যেন তা খুলে ফেলা হয়। ফ্লোরেন্সের কর্মোদ্যোগ ও তৎপরতায় অল্প সময়ের মধ্যেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হল হাসপাতাল চত্বর।

এরপর আহত সৈনিকদের সেবা যত্নের দিকে মনোযোগ দিলেন তিনি। আর তা করতে গিয়ে সামরিক বাহিনীর কাজকর্মের পদ্ধতি প্রায় গোটাটাই পাল্টে ফেলতে হল।

ফ্লোরেন্স কাজের ক্ষেত্রে ছিলেন নিমর্ম। সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতিও তিনি সহ্য করতে পারতেন না। ফলে যে সব কর্মচারীকে তিনি হাসপাতালে কাজের অনুপযুক্ত মনে করলেন তাদের সরিয়ে দিলেন অন্যত্র।

রুগীর শুশ্রূষার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ানো সরকারী বিধিনিষেধ সম্পর্কে ফ্লোরেন্সের মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায় এই সময়ে বন্ধুকে লেখা একটি চিঠিতে।

আরও পড়ুন- ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল – উইকিপিডিয়া

তিনি লিখেছেন, যেসমস্ত কর্মী মানুষের মৃত্যু মেনে নিতে পারবে, কিন্তু সরকারী নিয়ম-কানুন ভেঙ্গে একটা ঝাঁটাও দেবে না, তাদের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র সহানুভূতিও নেই।

ফ্লোরেন্স কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হাসপাতালের বিধি ব্যবস্থা একেবারে আমূল পাল্টে দিলেন। হাসপাতালের কর্মচারীদের নিয়ে তিনি একটি সহযোগী দল তৈরি করলেন। তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজের বিলি-ব্যবস্থাও করলেন।

কাউকে দিলেন হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব, কারোর হাতে দিলেন পোশাক-পরিচ্ছদের ভার। আবার প্রয়োজনীয় কেনাকাটার কাজে লাগালেন কাউকে।

দায়িত্ব বন্টন করেই কিন্তু নিশ্চিন্ত থাকলেন না তিনি। প্রত্যেকে তাদের দায়িত্ব ঠিক ঠিক পালন করছে কিনা সে বিষয়েও সর্বদা সজাগ দৃষ্টি ছিল তাঁর।

কেউ কাজে ভুলত্রুটি করলে কিংবা কোন কাজের গুরুত্ব বিষয়ে পর্যালোচনা করতে হলে, তা তিনি করতেন দিনের শেষে। ভুল-ত্রুটি শুধরে সকলে যাতে যথাযথভাবে নিজ নিজ কাজে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে সেই বিষয়ে তিনি প্রত্যেককে পরামর্শ দিতেন।

হাসপাতালের কাজকর্ম আগের তুলনায় অনেক সুচারু শৃঙ্খলাপূর্ণ হল। তাই নতুন কয়েকটি ওয়ার্ডও খোলা হল। হাসপাতালের পরিসরও বৃদ্ধি পেল।

ফ্লোরেন্সের আত্মত্যাগ, মানুষের প্রতি ভালবাসা ও কর্মনিষ্ঠা এমন ছিল যে, তাঁর পাশে যারা থাকতো কিংবা যাঁরা তাঁর কর্মতৎপরতা দেখতো, তারা উজ্জীবিত না হয়ে পারত না। তাঁর সহযোগিতায় এগিয়ে এসে সকলেই নিজেদের ধন্য মনে করত।

নতুনভাবে সেজে ওঠা হাসপাতালে ফ্লোরেন্স নিজেকে নিয়োজিত করলেন নিরলস সেবাকর্মে ।

দিন রাত্রির ব্যবধান ঘুচে গেল। সারা সময়ই তাঁকে দেখা যেত কোনও না কোন রুগীর পাশে শুশ্রূষারত। কেবল তাই নয়, রুগীদের খাবার তৈরি করার কাজেও তিনি হাত লাগাতেন।

রাত গভীর হলে, নিদ্রিত রুগীদের প্রতিটি বিছানার পাশে তাঁকে দেখা যেত একটি প্রদীপ হাতে! মুহূর্তের জন্যও তিনি শুশ্রূষারত রুগীদের অসহায় ভাবতে দিতেন না।

সেবার প্রতিমূর্তি ফ্লোরেন্সকে প্রদীপ হাতে দেখে শয্যাশায়ী রুগীদের মনে হত যেন স্বর্গের কোনও দেবী তাদের দুঃখ যন্ত্রণা দূর করার জন্য নেমে এসেছেন।

মূর্তিময়ী করুণা ফ্লোরেন্সের উপস্থিতির প্রভাব এমনই ছিল যে, রুগীরা তাদের দুঃখ যন্ত্রণা ভুলে পরম শ্রদ্ধায় তাঁকে তাকিয়ে দেখত। এক স্বর্গীয় আনন্দে তাদের মন প্রাণ উদ্ভাসিত হয়ে উঠত।

যুদ্ধ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়তে লাগল। সেই সঙ্গে আহত সৈনিকদের জন্যও নানা স্থানে গড়ে উঠতে লাগল নতুন নতুন হাসপাতাল। বেড়ে উঠল ফ্লোরেন্সের দায়িত্ব ও কর্মব্যস্ততা। সব হাসপাতালের তদারকির ভার তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হল।

ক্রমবর্ধমান কর্মভার হাসিমুখেই গ্রহণ করতেন তিনি। নিরলস তৎপরতায় সমাধা করতেন কৰ্তব্য।

বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে বেড়ানোর সময় তিনি ছিলেন ক্লান্তিহীন। ঝড়, তুষারপাত, বৃষ্টি কিছুই গ্রাহ্য করতেন না।

ফ্লোরেন্স কেবল যে আহত মানুষের দেহেরই শুশ্রূষা করতেন তাই নয়। তাদের মনে আনন্দ যোগাবার প্রতিও তিনি সমান সজাগ ছিলেন।

তাঁর আন্তরিক চেষ্টা ও উদ্যোগে হাসপাতালে হাসপাতালে লাইব্রেরি গড়ে উঠল। সেখানে নানা বিষয়ের বইয়ের সঙ্গে সংবাদপত্র রাখারও ব্যবস্থা হল, হল আমোদপ্রমোদের ব্যবস্থা।

এইভাবে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই হাসপাতালের প্রচলিত ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়ে গড়ে উঠল আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা।

সেবাকার্যে নিবেদিত প্রাণ ফ্লোরেন্সের অত্যধিক পরিশ্রমে শরীর ক্রমেই ভেঙ্গে পড়তে লাগল। মাঝেমাঝেই শয্যাশায়ী হয়ে পড়তে লাগলেন। অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়েও বিশ্রাম ছিল না তাঁর। সমস্ত ব্যবস্থা ঠিক

ঠিক চলছে কিনা নিয়মিত তার খোঁজখবর নিতেন। শরীর ক্রমশই জীর্ণ হয়ে পড়ছিল। উদ্বিগ্ন হয়ে ডাক্তাররা তাঁকে অবিলম্বে লন্ডনে ফিরে বিশ্রাম নেবার অনুরোধ জানাতে লাগলেন।

কিন্তু ফ্লোরেন্স তাঁদের জানালেন, যতক্ষণ পর্যন্ত একজনও আহত সৈনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকবে, ততক্ষণ স্কুটারি ত্যাগ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।

দীর্ঘ দু বছর চলার পর ১৮৫৬ খ্রিঃ যুদ্ধের অবসান হল। যুদ্ধক্লান্ত সৈনিকদের এবার স্বদেশে ফেরার পালা। ফ্লোরেন্সও চললেন তাঁদের সঙ্গে একই জাহাজে।

কৃতজ্ঞ, শ্রদ্ধায় আনত ব্রিটিশ সরকার ফ্লোরেন্সের জন্য আলাদা জাহাজ পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ফ্লোরেন্স।

সেবাগতপ্রাণ ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল আর্ত রুগ্ন মানুষের সেবাকে জীবনের ব্রত হিসেবেই গ্রহণ করেছিলেন। তাই সম্মান প্রশংসার প্রতি তিনি ছিলেন নিস্পৃহ দেশে পৌঁছবার পর দেশবাসী তাঁর সংবর্ধনার বিপুল আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

কিন্তু সবকিছুই তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে মহারানী ভিক্টোরিয়ার আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ তাঁকে রক্ষা করতে হয়েছিল।

ক্রিমিয়ার যুদ্ধ শেষ হল। কিন্তু ফ্লোরেন্সের কাজ তখনও শেষ হয়নি। যুদ্ধক্ষেত্রে সেবার কাজে নারীর যে পবিত্র ভূমিকা সংস্কারবদ্ধ সমাজের সামনে তিনি তুলে ধরেছেন, তাকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠার কাজ তখনও বাকি।

আরও পড়ুন- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী বাংলা

নারীর মমত্ব-স্পর্শে সেবার কাজ ততদিনে এক উচ্চ মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রাচীনপন্থী সমাজ সেই মর্যাদার বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। সেবার কাজকে আর হীন চোখে দেখার সুযোগ নেই।

দেশে ফিরে ফ্লোরেন্স একটা নার্সিংস্কুল খোলার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তাঁর স্বদেশবাসী এগিয়ে এল স্বতঃস্ফুর্ত সহযোগিতা নিয়ে।

কিছুদিনের মধ্যেই পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করে তাঁরা তাঁর হাতে তুলে দিল। সেই অর্থে ইংলন্ডে প্রতিষ্ঠিত হল আধুনিক নার্সিং শিক্ষার প্রথম শিক্ষালয়। সময়টা ১৮৫৯ খ্রিঃ।

স্কুল পরিচালনার বিধিব্যবস্থা এমনকি, পঠন-পাঠন ইত্যাদি যাবতীয় কাজ ফ্লোরেন্সের তত্ত্বাবধানেই চলতে লাগল।

স্কুলসংলগ্ন সেন্ট টমাস হাসপাতালে শিক্ষার্থিনী সেবিকারা সব রকম সহযোগিতাই পেতেন। তাঁদের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে এই সময় ফ্লোরেন্স নার্সিং-এর ওপর বইও লেখেন।

তাঁর সামরিক ক্ষেত্রে চিকিৎসা ও নার্সিং-এর বাস্তব অভিজ্ঞতা বিবৃত করে ৮০০ পাতার একটি মূল্যবান বিবরণী ফ্লোরেন্স স্কুল প্রতিষ্ঠার আগের বছরই প্রণয়ন করেছিলেন। তার নাম দেন Notes on matters affecting the health, efficiency and Hospital Administration of the British Army.

সেবিকা হিসাবে ফ্লোরেন্সের সম্মান ও প্রভাব দেশের প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক নতুন প্রণোদনা সঞ্চার করল।

হাসপাতালগুলির পরিচালনা ও বিধিব্যবস্থার সংস্কার হতে লাগল। ক্রমে ইংলন্ডের বাইরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের হাসপাতালেও তাঁর প্রচারিত বিধি ব্যবস্থা প্রবর্তিত হতে লাগল।

অত্যধিক পরিশ্রমে ফ্লোরেন্সের শরীর আগেই ভেঙ্গে পড়েছিল। শারীরিক অক্ষমতা সত্ত্বেও নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তাঁর উৎসাহ ও তৎপরতার কখনো অভাব ঘটেনি।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল উক্তি – Florence Nightingale Quote

“আপনার মধ্যে সূর্য উঠার জন্য মনের স্পার্কিকে জ্বলান।”

“সৌন্দর্যের নিরাময়ের প্রভাবগুলি কখনই হ্রাস করবেন না।”

“আমার নাম মনে রাখবেন – আপনি পরে এটি চিৎকার করবেন।”

“ভয়ের চেতনায় কত সামান্য কাজ করা যায়।

“প্রতিটি ব্যক্তি তার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সত্য বলুক।”

“সব কিছুই স্কেচি। পৃথিবী স্কেচ ছাড়া কিছুই করে না। ”

“গ্রামীণ পরিচ্ছন্নতার প্রথম সম্ভাবনা জল সরবরাহের মধ্যে।”

“আমি আমার সাফল্যকে এর জন্য দায়ী করি:” আমি কখনও কোনও অজুহাত দিতাম না বা গ্রহণ করি না। “

“আমার বন্ধুদের মধ্যে কেবল Godশ্বরকে এবং আমার বিড়ালদের মধ্যে seeশ্বরকে দেখার চেষ্টা করতে হবে।”

“আমার জীবনের কোনও অংশ নেই, যার উপরে আমি ব্যথা ছাড়াই ফিরে তাকাতে পারি” “

“নার্সিং এমন একটি প্রগতিশীল শিল্প যা স্থির হয়ে দাঁড়াতে পিছনের দিকে যেতে হয়।”

“অসুস্থদের জন্য সর্বোত্তম হওয়া জরুরি।”

“সমস্ত অভিজ্ঞতা হিসাবে দেখা যায় এমন রোগগুলি বিশেষণ, বিশেষ্য নয়।”

“সেরা নার্সদের স্কুলে যাওয়ার আগে তাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা রয়েছে।”

“দেশপ্রেম যথেষ্ট নয়, কারও জন্য ঘৃণা বা তিক্ততা থাকতে হবে না।”

“আমি খুন হওয়া লোকদের বেদিতে দাঁড়িয়ে আছি, আমি বেঁচে থাকতে আমি তাদের পক্ষে লড়াই করছি।”

“জীবন পেলে বাঁচবে। জীবন একটি দুর্দান্ত উপহার it এ সম্পর্কে ছোট কিছুই নেই।

“রোগীর বুদ্ধিমান এবং হিউম্যানিস্ট ম্যানেজমেন্ট হ’ল সংক্রমণের বিরুদ্ধে সেরা সুরক্ষার ব্যবস্থা।”

“আসুন আমরা কখনই নিজেকে সমাপ্ত নার্সদের বিবেচনা করি না…। আমাদের অবশ্যই আমাদের সমস্ত জীবন শিখতে হবে।”

“মহিলাদের কোনও সহানুভূতি নেই এবং আমার মহিলাদের অভিজ্ঞতাও প্রায় ইউরোপের মতোই বড়” “

“এটি” তাঁর নিজের সন্তুষ্টির জন্য “তিনি কোনও আত্মাকে অনন্তকালীন ক্ষতির দিকে” পূর্বনির্ধারিত “করেছেন has

“আমি নিজেকে একটি অবস্থান দেওয়ার কথা ভাবিনি, তবে সাধারণ মানবতার পক্ষে।

“একটি যুক্তিসঙ্গত সাধু বলেছেন,” যে কেউ আপনার সাথে বিরোধিতা করতে চায় তার সাথে কখনও বিতর্ক করবেন না। “

“একজন ভাল নার্স হওয়ার জন্য অবশ্যই একজন ভাল মহিলা হতে হবে, বা একজন সত্যিকার অর্থে একটি রঙিন বেল ছাড়া কিছুই নয়” “

“ইন্টারনেটে আপনি যা পড়েছেন তার সমস্ত কিছু বিশ্বাস করবেন না কারণ এর পাশের একটি ছবি আছে।”

“মহিলার কাছে তার স্নেহ ছাড়া আর কিছুই নেই, এবং এটি তাকে একবারে আরও প্রেমময় এবং কম ভালবাসে।”

“অযৌক্তিক গোলমাল হ’ল যত্নের সবচেয়ে নিষ্ঠুর অনুপস্থিতি যা অসুস্থ বা কূপের উপরে চাপিয়ে দেওয়া যেতে পারে”

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর মৃত্যু: Florence Nightingale’s Death

তাঁরই অনুপ্রেরণায় দেশে বিদেশে গড়ে উঠেছে নার্সিং আন্দোলন, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নার্সিং স্কুল। অবহেলিত সেবাবৃত্তি হয়ে উঠেছে সম্মানের ও আদরনীয় পেশা। নতুন যুগের মেয়েরা এই পেশাকেই এখন গ্রহণ করছে ব্রত হিসেবে। অবশেষে ১৯১০ খ্রিঃ ১৩ই আগস্ট জীবন-প্রদীপের প্রহরিণী লেডি অব দি লাইট, মহীয়সী ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল তাঁর স্বদেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

FAQ

1. ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল কোন দেশের নাগরিক?

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ব্রিটিশ দেশের নাগরিক

2. ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল কবিতা?

The Lady with the Lamp

3. ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর শপথ?

The Pledge of Florence Nightingale.
আমার কর্তব্য সম্পাদন করিবো।
to practice my profession faithfully.
অন্যকে ও দিবো না।

Join Telegram Channel

Leave a Comment