Biography of Homer – গ্রিক মহাকাব্যিক কবি হোমারের জীবনী

Biography of Homer: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম গ্রিক মহাকাব্যিক কবি হোমারের জীবনী সমগ্র সম্পর্কে এখানে জানব।

হোমারের জীবনী – Biography Of Homer

নামহােমার
সময়খ্রিষ্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দী
পিতা
মাতামিলানােপাসা
জন্মস্থানগ্রীক
জাতীয়তাগ্রীক
পেশাকবি
মৃত্যু৭০১ খ্রিস্টপূর্ব

হােমার কে ছিলেন? Who is Homer?

আমাদের দেশে বাল্মীকি ব্যাসদেব যেমন প্রাচীন কবি বলে স্বীকৃত তেমনি হােমারকেও বলা হয় ইউরােপের প্রাচীন ও আদি কবি।

পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্য ইলিয়ড এবং ওডিসিতার রচনা। হােমার জন্মেছিলেন গ্রীসে। তাঁর জন্মস্থান বা জন্মকাল সম্বন্ধে সঠিক কিছু জানা যায় না।

অনেকে এখনও বলে থাকেন যে হােমার নামে কোন কবি ছিলেন না। কিন্তু এই মত পন্ডিত-গবেষক মহলে গৃহীত হয়নি। অনুমান করা হয়, হােমার খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীতে বর্তমান ছিলেন।

হােমার এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Homer’s Parents And Birth Place

কিন্তু তাঁর জন্মস্থান বিষয়ে মতভেদ দূর হয়নি। গ্রীসের বিভিন্ন শহর হােমারের জন্মস্থান বলে দাবি করে থাকে। জন্মসাল বা জন্মস্থান বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও যতদূর জানা যায়, তাঁর মায়ের নাম উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

হােমারের মায়ের নাম ছিল মিলানােপাসা। পিতৃপরিচয় বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।

হােমার এর শিক্ষাজীবন: Homer’s Educational Life

প্রাচীন গ্রীসের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী অল্প বয়সেই হােমারকে বিদ্যাশিক্ষার জন্য শুরুগৃহে বাস করতে হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে, ফিলিয়াস নামে কোন এক শিক্ষকের পােষ্যপুত্র রূপে তিনি লালিত পালিত হন।

গুরুগৃহে শিক্ষালাভের পর হােমার শিক্ষকতাকে জীবিকারূপে গ্রহণ করেন। সেইসময় গ্রীসে লােকের মুখে মুখে ফিরত ট্রয়যুদ্ধের বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। চারণগণ গ্রামে গ্রামে ঘুরে এই সব কাহিনী লােকজনকে গান গেয়ে বা আবৃত্তিকরে শােনাত।

আরও পড়ুন- কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এর জীবনী

হােমার (হোমারের জীবনী) এই প্রচলিত উপাখ্যান গুলির লিখিতরূপ দেন। এই হলাে মহাকাব্য ইলিয়ড রচনার গােড়ার কথা। আমাদের দেশের রামায়ণ সম্পর্কেও এমনি মতবাদ প্রচলিত। লােকের মুখে মুখে রাম চরিত্রের বিভিন্ন ঘটনা আবৃত্তিহত। বাল্মীকি সে গুলােকে লিখিত রূপ দেন।

যাইহােক, বিয়ােগান্তক মহাকাব্য ইলিয়ডের মূল কাহিনী এরকমঃ ট্রয়ের রাজা ছিলেন প্রায়াম। তাঁর পুত্র প্যারিস একবার পার্শ্ববর্তী রাজ্য স্পার্টায় যান। সেখানে তিনি রাজা মেনিলিউসের স্ত্রী সুন্দরী হেলেনকে দেখে মুগ্ধ হন ও পরে অপহরণ করে ট্রয়ে নিয়ে আসেন।

এই ঘটনার পর বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশােধ নেবার উদ্দেশ্যে এবং হেলেনকে উদ্ধার করবার জন্য গ্রীকরা তৎপর হয়। আর্গসের রাজা মেনিলিয়াসের ভাই আগামেমননের গ্রীকবাহিনী ট্রয় আক্রমণ করে।

দীর্ঘ দশ বছর ধরে ট্রোজান ও গ্রীকবাহিনীর যুদ্ধ চলে। গ্রীকরা ট্রয় অবরােধ করে রাখে। সবশেষে গ্রীকবীর এফিলিস মহাবীর হেক্টরকে বধ করেন।

কাহিনীতে দেখা যায় দেবতারাও দুপক্ষে অংশ গ্রহণ করেছেন। ইথাকার রাজা ওডিসিউস, যিনি ইউলিসিস নামেও পরিচিত, ট্রয়যুদ্ধের পরে সদলবলে দেশে রওনা হন।

হােমার এর রচনা: Written by Homer

তাঁর প্রত্যাবর্তন পথের ভ্রমণ বৃত্তান্ত নিয়ে রচিত হয় ওডিসি মহাকাব্যের কাহিনী। দুটি মহাকাব্যেই চব্বিশটি করে সর্গ বা অধ্যায় আছে।

পন্ডিতদের মধ্যে মহাকাব্য দুটি নিয়েও যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। অনেকের মতে দুজন ভিন্ন ব্যক্তি কাব্য দুটি রচনা করেন। তবে আধুনিক কালে স্বীকৃত হয়েছে যেমহাকাব্য দুটি একই ব্যক্তির রচনা।

সেই ব্যক্তি হলেন মহাকবি হােমার। জানা যায় যে হােমার মধ্যবয়সে দৃষ্টি ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং জীবনের শেষ পর্যায়ে পুনরায় দৃষ্টিক্ষমতা ফিরে পান।

এই মতও প্রচলিত যে হােমার ছিলেন জন্মান্ধ। মুখে মুখে তিনি মহাকাব্য দুটি রচনা করেছিলেন। জীবনী সম্পর্কে উক্তি প্রত্যুক্তি যাই থাকনা কেনমহাকাব্য দুটির বিষয়বস্তুও চরিত্র বর্ণনায় আনন্দানুভূতিও সৌন্দর্যের যে প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

হােমার তাঁর জন্যই তিনি চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন। হােমার তাঁর মহাকাব্যে গ্রীকবীরদের হাতে ট্রয় নগর ধ্বংস হওয়ার কথা লেখেন। আধুনিক কালে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষকদের উৎখননের ফলে বিধ্বস্ত ট্রয়ের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে।

এই ধ্বংসাবশেষ মহাকাব্য কাহিনীর সত্যতা বা বাস্তবতা নির্ণয় করে।

আরও পড়ুন- হোমারের জীবনী উইকিপিডিয়া

Leave a Comment