Biography Of Atul Prasad Sen – বাংলা গানের ইতিহাসে অতুলপ্রসাদ সেনের অবদান

অতুলপ্রসাদ সেন জীবনী Biography Of Atul Prasad Sen- আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম অতুলপ্রসাদ সেন -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।

অতুলপ্রসাদ সেন জীবনী – Biography Of Atul Prasad Sen

নামঅতুলপ্রসাদ সেন
জন্ম20 অক্টোবর 1871
পিতারামপ্রসাদ সেন
মাতা
জন্মস্থানঢাকা
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারত
পেশাগীতিকার, সুরকার ও গায়ক
মৃত্যু26th আগস্ট 1934 (বয়স 62)

বাংলা সংগীত ক্ষেত্রে রামপ্রসাদ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম এবং দ্বিজেন্দ্রলাল -এর সঙ্গে যার নামটি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় তিনি অতুলপ্রসাদ সেন। বাংলা গানে তিনি একটি বিশিষ্ট সঙ্গীতরীতির প্রবর্তন করেন, তা অতুলপ্রসাদী সুর নামে সুখ্যাত।

অতুল প্রসাদ সেনের পিতামাতা ও জন্মস্থান: Atul Prasad Sen’s Parents And Birth Place

অধুনা বাংলাদেশের ঢাকায় ১৮৭১ খ্রিঃ ২০ শে অক্টোবর অতুলপ্রসাদের জন্ম। তার পিতার নাম রামপ্রসাদ সেন। তাদের আদিনিবাসছিলফরিদপুরের মগরায়।

বাল্যবয়সে পিতৃহীন হয়ে মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের স্নেহেযত্নে প্রতিপালিত হন। ভগবদভক্ত কালীনারায়ণ ভক্তিগীতি রচনা করে সুখ্যাত হয়েছিলেন।

তিনি নিজেও ছিলেন সুকণ্ঠগায়ক। তার সকল গুণই দৌহিত্রের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল এবং পরে সার্থকতা লাভ করেছিল।

অতুল প্রসাদ সেনের শিক্ষাজীবন: Atul Prasad Sen’s Educational Life

অতুলপ্রসাদ ১৮৯০ খ্রিঃ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে কিছুকাল কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশােনা করে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে বিলেত যান।

আরও পড়ুন- ভীমরাও রামজী আম্বেদকর জীবনী

অতুল প্রসাদ সেনের কর্ম জীবন: Atul Prasad Sen’s Work Life

১৮৯৪ খ্রিঃ বিলেত থেকে ফিরে এসে প্রথমে কিছুকাল কলকাতায় ও পরে রংপুরে আইন ব্যবসায় শুরু করেন।
যৌবনে লক্ষ্ণৌবাসী হন এবং সেখানেই আইন ব্যবসায় আরম্ভ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
কালক্রমে তিনি আইন ব্যবসায় প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন ও লক্ষ্ণৌ -এর শ্রেষ্ঠ ব্যবহারজীবী রূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি আউদবার অ্যাসােসিয়েশন ও আউদবার কাউন্সিলের সভাপতি হয়েছিলেন।

পেশাগত সাফল্য লাভের সুযােগে অতুলপ্রসাদ লাক্ষৌ নগরের সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন এবং নানাভাবে সমাজের উপকার সাধন করেন। তাঁর গৃহই হয়ে উঠেছিল নগরীর সারস্বত মন্ডলীর মিলনকেন্দ্র।

আরও পড়ুন- লেখক সুকুমার রায় এর জীবনী সমগ্র

উপার্জনের বেশিরভাগ অর্থই তিনি ব্যয় করতেন স্থানীয় জনসাধারণের সেবার কাজে। পরবর্তী কালে নিজের বইয়ের স্বত্ব ও বাসভবনটি, সমাজসেবী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠাকে দান করেন।
জীবিতকালেই তিনি এরূপ খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন যে নগরবাসী তার গুণ ও প্রতিভার সশ্রদ্ধ স্বীকৃতি জানিয়েছিল তার নামে তার বাসস্থানের রাস্তাটির নাম করন করে। জীবিতকালে এরূপ সম্মান লাভ বিরল দটনা।

সঙ্গীতই ছিল অতুলপ্রসাদের প্রাণের আরাম। নিজের রচিত গানে নিজেই সুর যােজনা করতেন। বাংলার বাউল ও কীর্তনের সুরের সঙ্গে হিন্দুস্থানী সঙ্গীতের সুর ও ঢঙ মিশিয়ে তিনি নিজস্ব সঙ্গীতরীতির প্রবর্তন করেছিলেন। তা-ই সুপরিচিত অতুলপ্রসাদী সঙ্গীত-বীতি।

অতুলপ্রসাদের রচিত গানগুলিকে প্রধানতঃতিনভাবে বিভক্ত করা যায়। তাহল স্বদেশী সঙ্গীত, ভক্তিগীতি ও প্রেমের গান। তাঁর স্বদেশী সঙ্গীতগুলি স্বদেশী আন্দোলনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।

জাতীয় চেতনা জাগরণে তার উঠ গােভারলক্ষ্মী, বল বল বলসবে শতবীণাবেণুরবে, আ-মরি বাঙলা ভাষা, প্রভৃতি গানগুলির অবদান অপরিসীম।

সারাজীবনে প্রায় দুশত গান রচনা করেন। তাঁর গানগুলি সংগৃহীত হয় ‘কয়েকটি গান’ ও ‘গীতিগুঞ্জ’ সংকলনে। সমস্ত গানের স্বরলিপি প্রকাশ করেন। কাকলি নামের গ্রন্থমালায়।

প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন সংগঠকদের মধ্যে অতুলপ্রসাদ ছিলেন অন্যতম প্রধান। সম্মেলনের মুখপত্র উত্তরার তিনি ছিলেন অন্যতম সম্পাদক।

সম্মেলনের কানপুর ও গােরখপুর অধিবেশনে তিনি সভাপতি হয়েছিলেন। কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গেও তিনি এককালে যুক্ত হয়েছিলেন।

অতুল প্রসাদ সেনের মৃত্যু: Atul Prasad Sen’s Death

১৯৩৪ খ্রিঃ ২৬ শে আগষ্ট পরলােক গমন করেন।

আরও পড়ুন- বিজ্ঞানী আর্যভট্ট এর জীবনী সমগ্র

বাংলা সঙ্গীত জগতের অন্যতম স্মরণীয় প্রতিভা অতুলপ্রসাদের অন্যতম সুবিখ্যাত দেশাত্মবােধক গানের কিয়দংশ-

হও ধরমেতে ধীর
হও করমেতে
বীর হও উন্নত শির, নাহি ভয়।
ভুলি ভেদাভেদ জ্ঞান
হও সবে আগুয়ান,
সাথে আছেন ভগবান, হবে জয়।
নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান,
বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান,
দেখিয়া ভারতে মহাজাতির উত্থান
জগজন মানিবে বিস্ময়।
জগজন মানিবে বিস্ময়।

Leave a Comment